কিভাবে পাবলিক স্পিকিং-এ নিজের মধ্যে প্রত্যয় বৃদ্ধি করবো প্রশ্নটি সব শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝেই। সবাই চায় নিজেকে উপস্থাপন করতে। ক্যারিয়ারে নিজের উন্নতি সাধনের জন্য সুন্দর উপস্থাপনার বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ফেইসবুক পেইজ https://www.facebook.com/say2farhad/ প্রাথমিক কৌশল তুলে ধরেছেন জনাব মো: ফরহাদুল ইসলাম। তিনি একাধারে একজন এইছ আর এন্ড মার্কেটিং এনালিস্ট, সি.ই.ও- ড্রিম কেয়ার ইভেন্ট ও ড্রিম স্কিল কেয়ার ইন্সটিটিউশন। আন্তর্জাতিক মণ্ডলের সুপরিচিত কর্পোরেট ট্রেইনার, মোটিভেটর, পাবলিক স্পিকার ও মডারেটর। তিনি সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত দেশ বিদেশে একজন ট্রেনিং অব ট্রেইনারস স্পেশালিষ্ট হিসেবে। তাঁর ফেইসবুক লিখাটি অনুমতি সাপেক্ষে হুবহু তুলে ধরা হলো।
“পানিতে না নেমে পাড়ে দাঁড়িয়ে যেভাবে সাঁতার শেখা অসম্ভব, ঠিক একইভাবে পাবলিকের সামনে না দাঁড়িয়ে শুধু বই পড়ে পাবলিক স্পিকার হওয়াও অসম্ভব।”- মো: ফরহাদুল ইসলাম।
সার্বজনীন একটি প্রশ্নের সম্মুখীন আমাকে প্রতিনিয়তই হতে হয়, “কিভাবে পাবলিক স্পিকিং-এ নিজের মধ্যে প্রত্যয় বৃদ্ধি করবো”?
আমি মানুষের সামনে দাঁড়ালেই পা-দুটোকে মনে হয় অনেক ভারী।
আসুন, একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি।
আপনি কি কখনো ট্রেনযাত্রার সময় জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখেছেন কোন গরুকে তার মালিক রেললাই থেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে?
যে গরুটি ট্রেনের হুইসেল কি জানে না, সেখানে গরুর মালিক তাকে নার্ভাস হয়ে রেলপথ থেকে সরিয়ে আনতে চেষ্টা করছেন।
গরুটি কোনভাবেই রেলপথ থেকে সরছেনা। গরুটিকে পিছিয়ে আনাও যাচ্ছেনা (আমরা জানি গরুকে উল্টোপথে ঘুরিয়ে নেয়া সম্মুখের দিকে নেয়ার চেয়ে অনেক অনেক কঠিন)। অন্যদিকে গরুর মালিক নিজেই নার্ভাস। ট্রেন কি সাথে সাথে থেমে যাবে গরুটিকে রক্ষা করার জন্য? নাকি গরুর মালিক গরুটিকে ট্রেনে চাপা পড়তে দিয়ে নিজেকে রক্ষা করবেন?
আপনি গরুর মালিক হলে কি করতেন? আপনি কি গরুর পশ্চাৎভাগে সজোরে আঘাত করতেন না? যদি এক আঘাতে গরুটি রেলপথ থেকে সরে না যায়, তাহলে কি বার বার আঘাত করতেন না? সর্বশক্তি প্রয়োগকরে গরুটিকে বেত্রাঘাত করতেন না? একইসাথে নিজে গলাফাটিয়ে ‘হট-হট’ শব্দে চিৎকার করতেননা?
নিজেকে গরুর মালিকের স্থানে চিন্তা করুন। এবং গরুর এই ফর্মুলা নিজের চিন্তা-চেতনার উপর প্রয়োগ করুন ‘পাবলিক স্পিকিং’-এ ভয়কে জয় করার ক্ষেত্রে। গরুটির মালিক যদি ‘সামনে-পেছনে’ চিন্তা করে কনফিউজড হয়ে গরুটির অনিবার্য মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে পাবলিকের সামনে কথা বলতে ‘পারবো-পারবোনা’ এই কনফিউশন আপনার পাবলিক স্পিকার হিসেবে নিজের স্বকীয়তা প্রকাশের ক্ষেত্রে অনিবার্য মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়াবে।
তাই নিজের মানসিক ভয় নামের গরুটিকে নিজেই জোরে আঘাতের পর আঘাত করুন।
নিজের কনফিউশনকে আর ভয়কে জোরে জোরে চিৎকার করে ভয় দেখান। আঘাতের পর আঘাত করতে থাকুন এবং সামনের দিকেই ধাবিত করুন নিজেকে। কারন আপনি জানেন, পাবলিক স্পিকার হওয়ার ক্ষেত্রে সামনের দিকে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ আপনার জন্য খোলা নেই। তাই সম্মুখে এগিয়ে যাওয়াই কি উচিৎ নয়?
মনে রাখবেন, পানিতে না নেমে পাড়ে দাঁড়িয়ে যেভাবে সাঁতার শেখা অসম্ভব, ঠিক একইভাবে পাবলিকের সামনে না দাঁড়িয়ে শুধু বই পড়ে পাবলিক স্পিকার হওয়াও অসম্ভব।
প্রশিক্ষণ-অনুশীলন, অনুশীলন-প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণ-অনুশীলন, অনুশীলন-প্রশিক্ষণ ধারাবাহিক বজায় রাখলে পাবলিশ স্পিকার হিসেবে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন অসাধারন ব্যক্তিত্ব।
লেখক:
মো: ফরহাদুল ইসলাম।
*এইছ আর এন্ড মার্কেটিং এনালিস্ট।
*সি.ই.ও- ড্রিম কেয়ার ইভেন্ট ও ড্রিম স্কিল কেয়ার ইন্সটিটিউশন।
*কর্পোরেট ট্রেইনার, মোটিভেটর, পাবলিক স্পিকার ও মডারেটর।
*স্পেশালিষ্ট – ট্রেনিং অব ট্রেইনারস