আশিক, একটি ছদ্মনাম। অনলাইনে বিজনেস পরিচালনা করছেন বিগত পাঁচ বছর যাবত। এ দিয়েই কোন রকম নিজের পড়াশুনা আর গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার জন্য কিছু খরচাদি পাঠান। ইকমার্স ব্যবসা বাংলাদেশের সীমিত এবং কোলাহল পূর্ণ যাতায়াত ব্যবস্থায় কতোটা দুর্বিষহ তা কেবল এর সাথে সম্পৃক্ত উদ্যোক্তাগণ-ই বুঝতে পারেন। এ দেশে এখনো পর্যন্ত অনলাইন বিজনেস সার্ভিস প্রদানকারীদের আতঙ্কের এক নাম সঠিক সময়ে “ডেলিভারি”! ডেলিভারির ক্ষেত্রে সাধারণত ঢাকা সিটি এবং ঢাকা সিটির বাহিরে সমগ্র বাংলাদেশ। এ দুটি শ্রেণিতেই বিভক্ত করা হয়।
ঢাকা সিটিতে কেউ কেউ নিজস্ব ডেলিভারি ম্যান দিয়ে স্মার্ট ডেলিভারি দিচ্ছে। আবার অভ্যন্তরীণ কিছু কুরিয়ার ঢাকা সিটিতে গড়ে উঠেছে এই অনলাইন বিজনেসকে কেন্দ্র করেই। ঢাকা সিটির বাহিরে ডেলিভারি করতে হলে প্রথমেই নাম আসে এস.এ. পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের, এরপরেই আসে জননী, করতোয়া এবং সবশেষ সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস। আর অভিযোগের পুরোটাই এই কুরিয়ারকে ঘিরেই।
আশিক মিয়া সুন্দরবনের কর্মকর্তাদের তোরজোড়ে এবং কথার ফুলঝুরিতে নিয়মিত সুন্দরবনে ঢাকা সিটি এবং ঢাকা সিটির বাহিরে হোম ডেলিভারির জন্য বুকিং দিচ্ছে নিয়মিত। প্রায় এক সপ্তাহের বুকিংয়ের পর হিসাব। হিসাবে মিললো প্রায় ষাট হাজার টাকার বুকিং হয়েছে। অথচ দশ দিন পর জানতে পারে মাত্র চারটি প্রোডাক্ট ডেলিভারি হয়েছে। অথচ বুকিংকৃত পণ্যের সংখ্যা প্রায় ৫০ টিরও বেশী, যার সব ক’টিই ঢাকা সিটির মধ্যে! কুরিয়ারটির বিবরণ অনুযায়ী আজকের প্রোডাক্ট পরের দিন ঢাকা সিটিতে বুকিং করার কথা, সপ্তাহে দুইবার পেমেন্ট করার কথা, রিটার্ন প্রোডাক্ট ঢাকা সিটির ক্ষেত্রে ০৩ থেকে ০৫ দিনে ফিরিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও প্রোডাক্টের হদিসও মেলেনা!
আবার ঢাকা সিটির বাহিরে প্রোডাক্ট পৌঁছালেও কুরিয়ারের প্রতিনিধিরা অর্ডার করা ক্রেতাদের ফোন কল না করার অভিযোগও জোড়ালো। এমতাবস্থায় অনলাইন ব্যবস্থায় নেমেছে এক নিরব স্থবিরতা। অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সুন্দরবন কুরিয়ার থেকে।
এমন প্রেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের উচিত হবে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগকে আরো গতিশীল করে বেসরকারী কুরিয়ারের মাধ্যমে লেনদেন সংক্রান্ত কাজকর্মে অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা। এ ক্ষেত্রে কেউ কেউ সুন্দরবন কুরিয়ারের লেনদেন এর ব্যাপারে একজন সরাকারি নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার তদারকি করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন।