ক্রীড়া প্রতিবেদক : বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তিনটি ম্যাচের দুটি খেলতে পারে বাংলাদেশ।
দুটিতেই জয় তুলে নিয়ে নিশ্চিত করে সুপার টেন। দোর্দান্ত প্রতাপ দেখিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে এলেও সেটা আর ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা।
মূলপর্বের প্রথম ম্যাচে বিখ্যাত ইডেন গার্ডেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৫ রানে হার মানে মাশরাফি বাহিনী।
এরপর অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে হার মানে ৩ উইকেটে। বেঙ্গালুরুতে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে যায় ১ রানে।
ভারতের বিপক্ষে ১ রানের হারের আক্ষেপ নিয়ে আজ শনিবার সুপার টেনে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় টাইগাররা। কোটি কোটি টাইগার ভক্তের আশা ছিল অন্তত শেষটা জয়ে রাঙিয়ে দেশে ফিরবে টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে ১ রানের হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারবে তারা। কিন্তু সেটা আর হল কই?
বিশ্বকাপে নিজেদের শেষটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডকে মুস্তাফিজের বোলিং ভেল্কিতে ১৪৫ রানের মধ্যে বেধে ফেললেও জয় ছিনিয়ে নিতে পারেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
কিউইদের বোলিং তোপে ১৫.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৭০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রান। এর আগে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ৭৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার তার চেয়েও কম রানে আউট হল। ফলে শেষ ম্যাচে ৭৫ রানে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল এশিয়া কাপের ফাইনালিস্টরা।
ব্যাট হাতে এদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন শুভাগত হোম। তিনি ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ রান করেন সাব্বির। ১১ রান আসে মিথুন আলীর ব্যাট থেকে। বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি।
বল হাতে নিউজিল্যান্ডের ইশ সোধি ও গ্রান্ট এলিয়ট ৩টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন নাথান ম্যাককালাম, মিশেল স্যান্টনার ও মিশেল ম্যাকক্লেনাঘান।
ব্যাট হাতে ৩২ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
নিউজিল্যান্ড প্রথম তিন ম্যাচে জিতে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে অপরাজিত থেকেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলবে কিউইরা।
১৪৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৩ রানে রান আউটের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম ইকবাল। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে ম্যাকক্ল্যানাঘ্যানের বলে বোল্ড হয়েছেন বাংলাদেশি আরেক ওপেনার মোহাম্মদ মিথুন। মিচেল স্যান্টনারের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে নাথান ম্যাককালামের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব আল হাসানও।
নবম ওভারের পঞ্চম বলে স্যান্টনারের বলে ম্যাককালামের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন সাব্বির রহমান (১২)। দশম ওভারের শেষ বলে স্টাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার (৬)। ৪৪ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিম এলিয়টের বলে বোল্ড হয়ে যান। ৪৮ রানের সময় ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা মাহমুদউল্লাহ সোধির বলে বোল্ড হন।
৫৯ রানে মাশরাফি, ৬৫ রানে মুস্তাফিজ ও ৭০ রানে আল-আমিন আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে যবনিকাপাত ঘটে বাংলাদেশের ইনিংসের।
এর আগে ব্যাটি করতে নেমে মুস্তাফিজের করা চতুর্থ ওভারের শেষ বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান হেনরি নিকোলস (৭)। মুস্তাফিজের করা নবম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে যান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (৪২)। ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে কলিন মুনরোকে (৩৫) বোল্ড করেন আল-আমিন হোসেন। ১৬ তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় অধিনায়ক মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন কোরি অ্যান্ডারসন।
মুস্তাফিজের করা ১৮ তম ওভারের শেষ বলে শুভাগত হোমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হোন গ্রান্ট এলিয়ট (৯)। ১৯ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আল-আমিনের দ্বিতীয় শিকার হন রস টেলর (২৮)। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শেষ ওভারে আবারও হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরী করে সেটির দেখা পাননি মুস্তাফিজ। বিশ্বমঞ্চে সেটি করতে পারলে দেশের হয়ে হ্যাটট্রিকের নতুন একটি ইতিহাস গড়তে পারতেন বিস্ময়বালক মুস্তাফিজ।
২০তম ওভারের চতুর্থ বলে মিচেল স্যান্টনারকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। পঞ্চম বলে নাথান ম্যাককালমকে ফেরানোর পর হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরী হয় মুস্তাফিজ। কিন্তু ওভারের শেষ বলটিকে ম্যাকক্ল্যানাগান ছক্কায় পরিণত করে নিজেদের দলীয় সংগ্রহ ১৪৫ করেন।