সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার মহাষষ্ঠীতে দুর্গা দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের এ উৎসব শুরু হলো। এবার দেবীকে কৈলাস থেকে মর্ত্যে গজে (হাতি) চড়ে নিয়ে আসা হবে। ফিরে যাবেন নৌকায় করে।
আজ থেকে ঢাকের বাদ্য, চন্ডী ও মন্ত্রপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীসহ সারা দেশের ৩২ হাজারের বেশি পূজামন্ডপ।
আগামীকাল রবিবার হবে মহাসপ্তমী বিহিতপূজা। এরপর সোমবার মহাঅষ্টমী, মঙ্গলবার মহানবমী ও বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শেষ হবে।
দুর্গাপূজা উদযাপনে পাঁচ দিনব্যাপী আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি, প্রসাদ বিতরণ হবে। এ ছাড়া মহাঅষ্টমীর দিনে অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপূজা ও বিজয়া দশমীতে শোভাযাত্রার আয়োজন থাকছে। ইতিমধ্যে জাতীয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারা দেশের পূজামন্ডপগুলোকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রতিটি পূজামন্ডপে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবার রাজধানীসহ সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। রাজধানীতে পূজা হচ্ছে ২৪১টি মন্ডপে। গত বছরের চেয়ে এবার সারা দেশে ৫০টি এবং ঢাকায় ৬টি পূজামন্ডপ বেড়েছে। পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি আয়োজক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক দল মন্ডপের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সারা দেশের পূজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মনিটরিং সেল গঠনের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়েও মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সবাইকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, সুন্দরভাবে দুর্গাপূজার আয়োজন ও শান্তিপূর্ণভাবে সুসম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন তারা।
পরিষদের নেতারা আরও বলেন, গত বছর পশুশক্তির তান্ডবে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল যা ছড়িয়ে পড়েছিল প্রায় ২৭টি জেলায়। তবে এবার সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক ও প্রশংসনীয়।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, ‘মহালয়ার দিন থেকে দেবীপক্ষ শুরু হয়েছে। আজ ষষ্ঠীতে দেবীকে আমন্ত্রণের মাধ্যমে দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে।’