1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
রমজানের শুরুতেই চাহিদা পূরণে ব্যর্থ টিসিবি - প্রিয় আলো

রমজানের শুরুতেই চাহিদা পূরণে ব্যর্থ টিসিবি

  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ জুন, ২০১৬
  • ২০৩
129

হাসান রেজা : 129বাজেটের সীমাবদ্ধতা এবং বরাদ্দের অভাবে রমজানের প্রথম সপ্তাহেই ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

 

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে খোলাবাজারে পাঁচটি পণ্য বিক্রি করছে সরকারি সংস্থাটি। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানেই ট্রাকপ্রতি পণ্যের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে মজুদ শেষ হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থান এবং বরিশালে বন্ধ হয়ে গেছে খেজুর বিক্রি।

 

রমজানে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হলেও ঠিকমতো পণ্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকার বাইরের ডিলাররা।

 

টিসিবি কর্মকর্তাদের দাবি, বেশি বরাদ্দ দিলে অসাধু ডিলাররা বাজারে পণ্য বিক্রি করে দেয়। আর ডিলাররা বলছেন, রোজার আগে টিসিবি অতিরিক্ত মজুদ করলে এই সংকট হতো না।

 

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ২৯ মে থেকে টিসিবি ঢাকাসহ সারা দেশে ১৭৯টি ট্রাকে পরিবেশকদের মাধ্যমে রমজানের অপরিহার্য পাঁচটি পণ্য বিক্রি শুরু করে। এ ক্ষেত্রে বাজারের চেয়ে প্রতিটি পণ্যের দাম ১৫ থেকে ৩০ টাকা কম হওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করছেন টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের সামনে।

 

কিন্তু কয়েক দিন ডিলারদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হলেও ৪ জুন থেকে মসুর ডাল ছাড়া তিনটি পণ্যের বরাদ্দ ১০০ থেকে ৪০০ কেজি পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ট্রাকে পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও অধিকাংশ স্পটে পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে যাচ্ছে দুপুরের মধ্যেই। আর খেজুর না পেয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।

 

জানা গেছে, রোজার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে ছোলা, ডাল, চিনি, সয়াবিন তেলসহ পাঁচটি নিত্যপণ্য বিক্রির কথা ছিল রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু সিরাজগঞ্জে গত কয়েক বছরের মতো এবারও সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত স্বল্প আয়ের মানুষ। লোকসানের অজুহাতে বিক্রয় স্বত্ব বাতিলের চিঠি দিয়েছে এ জেলার ডিলাররা। শেষ মুহূর্তে অবস্থা সামাল দিতে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে।

 

কুষ্টিয়ার ডিলারদের অভিযোগ, টিসিবির কাছ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ আর মানহীন পণ্য নিয়ে লোকসানে পড়েছেন তারা। তাই ডিলার থাকলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের হয়রানির ভয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না তারা। প্রায় একই অভিযোগ নাটোরের ডিলারদেরও। নির্ধারিত স্থান আর পণ্যের বিবরণ জানাতে পারছে না নাটোরের জেলা প্রশাসন। আর এই অরাজকতার সুযোগে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলেছে অসাধু বিক্রেতারা। যদিও এসব স্থানে ছোটখাটো পরিসরে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু চাহিদামাফিক পণ্য নেই।

 

তথ্য মতে, রমজান উপলক্ষে রাজধানীর ৩৩টি স্পটের পাশাপাশি চট্টগ্রামের ১০টি, বাকি বিভাগীয় শহরগুলোতে পাঁচটি করে, জেলা সদরগুলোতে দুটি স্পটে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি।

 

এদিকে সংস্থাটির বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পেছনে বরাদ্দের অভাবকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জনকল্যাণমুখী কার্যক্রম পরিচালনায় রাখা হচ্ছে না কোনো তহবিল। দেওয়া হচ্ছে না কোনো বিশেষ বরাদ্দ। এ কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রায় নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটেও টিসিবির জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। অর্থাৎ এই সমস্যার সমাধান শিগগিরই মিলছে না।

 

টিসিবির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, টিসিবির মাধ্যমে সরকারের দেওয়া ভর্তুকির অর্থের ৪০ শতাংশই খেয়ে ফেলছে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ। ভোক্তার কাছে সর্বাধিক চাহিদাযোগ্য নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং বছরজুড়ে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ অর্থ ছাড় হয়ে আসছে। কিন্তু সুদ পরিশোধ খাতে এসব ভর্তুকির প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। বাকি ৬০ শতাংশে আবার ভাগ বসাচ্ছে পরিবহন ব্যয়, গোডাউন ভাড়াসহ অদৃশ্য নানা খাতসহ সার্বিক পরিচালন ব্যয়।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদন মতে, প্রতিবছর টিসিবির পণ্য বিক্রিতে গড় ভর্তুকি যাচ্ছে ৬৮ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ভর্তুকি বাবদ গত ৫ বছরে সরকার টিসিবির অনুকূলে মোট ৩৪১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যেখানে ১৩৬ কোটি টাকাই ব্যয় হয়ে গেছে টিসিবির প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান আনতে নেওয়া ঋণের উচ্চ হারের সুদ পরিশোধে।

 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে টিসিবির একটা নিজস্ব মূলধন থাকা দরকার। এ মূলধন পেলে টিসিবি স্বাধীনভাবে পণ্য ক্রয় এবং ভোক্তা পর্যায়ে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে টিসিবিকে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়ীদের মতো ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সারা দেশে কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে পারবে।

 

টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির বলেন, অসাধু ডিলারদের খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি ঠেকাতে এবং বেশি ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে ডিলার ও ক্রেতাদের জনপ্রতি বরাদ্দ কমানো হয়েছে। তবে ডিলাররা বলছেন, রোজার আগে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি ও মজুদ করা হলে এই সংকটের সৃষ্টি হতো না।

 

আর মূলধন ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, টিসিবিকে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে বাড়তি চাপ তৈরি হয়। তবে সরকারের কাছে ২০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছিল, সেটা পাওয়া গেলে এসব সমস্যার সমাধান হতো।

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x