নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় দুটি বাসের সংঘর্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও দুজন নারী রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে অন্তত ৬৫ জন। তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তের মাইল এলাকায় রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে রক্তের সংকট দেখা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ রক্তের জন্য জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টার দিকে তারাগঞ্জের তের মাইল এলাকায় সৈয়দপুর থেকে রংপুরগামী তৃপ্তি পরিবহণ ও কুমিল্লা থেকে সৈয়দপুরগামী সায়মুন পরিবহনের সংঘর্ষ হয়। এতে বাস দুটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে ১২ জনের মৃত্যু হয়। লাশগুলো রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন- তৃপ্তি পরিবহনের ড্রাইভার তৈয়ব মিয়া (৪০), একই গাড়ির হেলপার দিনাজপুরের ভুষিরবন্দরের অতুল রায়ের ছেলে চন্দন রায়, নীলফামারীর সৈয়দপুরের পাশারী পাড়ার ইউনুছ আলীর ছেলে মো. আলী কালা (৩৮), একই এলাকার ছাবেদ আলীর ছেলে আব্দুল মতিন (৩৫), রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক জিনাত আরা (৩৫), নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী এলাকার ছকমল মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৮), রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আকুল মিয়া (৪০), সুবোধ চন্দ্র রায় (৩৭) ও মমদেল মিয়া (৫৫)। বাকি তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দুর্ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং আহত ও নিহতদের খোঁজ-খবর নেন। পরে হাসপাতালে এসে জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার নিহতদের পরিবারকে ৫ হাজার এবং তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিলুফা সুলতানা ৪ হাজার টাকা করে প্রত্যেক নিহত পরিবারকে সহায়তা দেন।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। হতাহতদের স্বজনদের আহাজারিতে রমেক হাসপাতালের ক্যাম্পাস ভারি হয়ে উঠে।
রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আসম বরকতুল্লাহ ১২ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রক্তের স্বল্পতার জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে রক্ত আহ্বান করা হয়েছে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল লতিফ জানান, দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসে কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছে।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমরা দুর্ঘটনাস্থলে যাই এবং আহত ও নিহতদের রমেক হাসপাতালে নিয়ে আসি।’