ঝালকাঠি: ছারছিনা দারুচ্ছুন্নাত আলিয়া মাদরাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মো. তৈয়্যবুর রহমান (কাঠালিয়া হুজুর) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।গত ১৬/০২/২০১৬ ইং রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি তাঁর নিজ বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়ায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মাওলানা তৈয়্যবুর রহমানের বড় ছেলে মাওলানা নাসরুল্লাহ প্রিয় আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাসরুল্লাহ জানান, বুধবার বিকাল ৩টায় ঝালকাঠিতে আব্বুর (মরহুমের) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ‘ইলমে শরিয়ত ও তরিকতের সাগর ছিলেন মাওলানা তৈয়বুর রহামান। তার মৃত্যুতে ইলমে দীনের একজন মহান খাদেমকে হারাল এই জাতি।’
বাংলার আজহার-খ্যাত মাওলানা তৈয়বুর রহমান ১৯৮৯ সালে ছারছিনা দারুচ্ছুন্নাত আলিয়া মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। প্রায় দেড় যুগ ইলমে দীন ও শরিয়তের খেদমত করেন তিনি।
২০১১ থেকে ক্যান্সারে ভুগছিলেন মাওলানা তৈয়বুর রহমান।
কাঁঠালিয়া হুজুর সম্পর্কে তাঁর একজন ছাত্রের ফেইসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরছি-
“মাওলানা তইয়েবুর রহমান (কাঁঠালিয়া হুজুর) রহঃ
সুন্নতে নববীর এক জীবন্ত উদাহরন ছিলেন বাংলাদেশে হাজারো মুহাদ্দিসের উস্তাদ ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা তইয়েবুর রহমান (কাঁঠালিয়া হুজুর) রঃ। রাসুল সঃ এর জন্য হুজুরের ভালবাসা ছিল কিংবদন্তী তুল্য। একটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়-
২০০৭ সাল। ১০ম শ্রেণীতে পড়ি। একাডেমিক ভবনের ২য় তলায় পশ্চিম পাশে ছিল আমাদের ক্লাসরুম। পাশেই দারুল হাদিস অর্থাৎ কামিল হাদিস এর ক্লাস রুম।
নিত্যদিনের মতই ক্লাস চলছে। হঠাৎ করেই অনেক লোকের একত্রে চাপা কান্নার আওয়াজ পেয়ে স্তব্দ হয়ে গেলাম। পরক্ষনে বুঝলাম আওয়াজ টি পাশের রুম থেকে আসছে। ক্লাসের পর খোজ নিয়ে জানলাম কাঁঠালিয়া হুজুর কামেলে বুখারি শরিফ পড়াচ্ছিলেন। সেখানে حنين الجذع (খেজুর কাণ্ডের আকুলতা) সম্পর্কিত হাদিস খানা পড়াতে গিয়ে রাসুল সঃ এর জন্য একটি জড় খেজুর বৃক্ষ কাণ্ডের যে ভালবাসা সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি কেদে ফেলেন..তার সাথে ছাত্ররাও আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না করতে থাকে। এটা যথা সম্ভব কাজী আমিন ভাইদের ব্যাচ।
কাঁঠালিয়া হুজুর শুধু হাদিসের শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন সুন্নাতে নববীর একজন মডেল। তিনি শুধু মুখেই রাসুল সঃ এর কথা বলতেন না, বরং সমস্ত হৃদয় জুড়ে প্রিয় রাসুল সঃ এর ভালবাসা লালন করতেন।
আজ এই মহান মানুষটি আমদের মাঝে নেই। আবার কোন দিন এমন একজন মানুষ পাব আল্লাহই ভালো জানেন। হে আল্লাহ তুমি হুজুর কে জান্নাতের সু-উচ্চ মাকাম দান কর।”