1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
বাতাসে বাড়ছে নাইট্রোজেন সালফার, বাড়ছে বজ্রপাত - প্রিয় আলো

বাতাসে বাড়ছে নাইট্রোজেন সালফার, বাড়ছে বজ্রপাত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭
  • ২৭৫
Kharajilip

আব্বাস আলী : দেশে বজ্রপাত বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে বজ্রপাতজনিত মৃত্যুর সংখ্যা। শহর ও গ্রামাঞ্চলে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে বজ্রপাত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনই বজ্রপাত বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বাতাসে নাইট্রোজেন সালফারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে বজ্রপাতের ঘটনা। পাশাপাশি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেও বজ্রপাত বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে ২০ শতাংশ বজ্রপাত বৃদ্ধি পায়। এ হিসাবে বজ্রপাত প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে আছে। এ কারণে জলীয়বাষ্প যখন এর সংস্পর্শে আসছে বজ্রপাতও আগের তুলনায় বেশি হচ্ছে। তিনি জানান, বজ্রমেঘ বা সিভি ক্লাউডের কারণে বজ্রপাত হয়। যখন জলীয়বাষ্পসহ গরম বাতাস উপরের দিকে ওঠে, জড়তার ভ্রামকের কারণে এ মেঘ অনেক উপরে উঠে সুপারকুল ওয়াটার ড্রপলেস কণায় পরিণত হয়। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে তা নিচে নামে। গরম বাতাসের সংস্পর্শে আবার জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়ে উপরে উঠে যায়। এভাবে কয়েক দফায় ওঠানামা করে কণাগুলো। এতে কণাগুলো বৈদ্যুতিক চার্জসম্পন্ন আয়ন কণায় পরিণত হয়ে বিপুল শক্তির বিদ্যুৎউৎপন্ন করে। পরিভ্রমণকারী কণাগুলো নিষ্ক্রিয় (নিউট্রাল) হওয়ার চেষ্টা করে। ভূপৃষ্ঠের বিপুল পরিমাণ আয়ন ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। তাই ভূপৃষ্ঠ কণাগুলোকে আকর্ষণ করে। এতে কণাগুলো আকাশ থেকে মাটির দিকে ধাবিত হয়। একেই বজ্রপাত বলে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই শতাব্দীর শেষে পৃথিবীর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন বজ্রপাতের হার সাড়ে ১২ শতাংশ বাড়বে।

বাংলাদেশে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বজ্রপাতের পরিমাণের রেকর্ড থেকে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এপ্রিল মাসে বজ্রপাতের পরিমাণ আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উপকূলে বজ্রপাত পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। ২০১০ সালে ঢাকায় এপ্রিলে বজ্রপাত হয়েছে ১৫ বার। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ বার। বগুড়ায় ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে বজ্রপাতের পরিমাণ ছিল ১৬ বার, ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল ৫২ বার, শ্রীমঙ্গলে ২০১০ সালে ছিল ৬৪ বার আর ২০১৫ সালে বেড়ে ৮৯ বার। চট্টগ্রামে ২০১০ সালে বজ্রপাত হয় ৭ বার আর ২০১৫ সালে হয় ৩৯ বার, কক্সবাজারে এর পরিমাণ যথাক্রমে ১-১১ বার, হাতিয়ায় ৮-২৭ বার, মাইজদীকোর্টে ৭-২৬ বার, পটুয়াখালীতে ৭-৩১ বার, সন্দ্বীপে ১-৫১ বার, রাঙ্গামাটিতে ১৩-৪৮ বার, সীতাকুণ্ডে ৮-২৪ বার। ফলে দেখা যাচ্ছে উপকূল অঞ্চলে ১০০ থেকে ২০০ ভাগ এমনকি কোথাও কোথাও তার চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বজ্রপাতের পরিমাণ।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বজ্রপাতের সময় ৫৫০ থেকে ৬০০ মেগা ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় অথচ একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য প্রয়োজন ১০০ থেকে ১১০ ভোল্ট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘কালো মেঘ বজ্রপাত ঘটায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে কালো মেঘের আধিক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া বড় তালগাছ কমে যাওয়ায় ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বজ্রপাতে প্রাণহানি বেড়ে গেছে। একমাত্র সচেতনতাই প্রাণহানি কমাতে পারে ।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘বিশ্বে প্রতিবছর ২ হাজার থেকে ২৪ হাজার লোক বজ্রপাতে মারা যায়। আহত হয় ২লাখ ৫০ হাজার লোক। বাংলাদেশে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ১৫৫ জন বজ্রপাতে মারা গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে সামাজিক ও কারিগরি বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ব্যাপক বনায়ন বজ্রপাতের ঝুকি হ্রাস করে। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে এ বনায়নে কাজ করা হবে। এছাড়া ফাঁকা অঞ্চলে ১০ লাখ তাল গাছ লাগানোর কাজ চলছে। বিশেষ প্রকল্পের আওতায় হাওর অঞ্চলে বজ্রনিরোধক একতলা বিশিষ্ট টাওয়ার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে বজ্রপাতের সময় মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে।’

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x