1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
ফাঁসির আগ মুহূর্তে যুবলীগ নেতা ‘অসুস্থ’, অবশেষে প্রাণভিক্ষা - প্রিয় আলো

ফাঁসির আগ মুহূর্তে যুবলীগ নেতা ‘অসুস্থ’, অবশেষে প্রাণভিক্ষা

  • আপডেট সময় সোমবার, ৯ মে, ২০১৬
  • ২০৮
Ad

ডেস্কঃ  ফাঁসির adমঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছিল। রেওয়াজ অনুযায়ী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে উপস্থিত হতেও বলেছিল কারা কর্তৃপক্ষ। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার এক দিন আগে স্থগিত করা হয় ফরিদপুরের খুনের আসামি যুবলীগের নেতা আসলাম ফকিরের ফাঁসি।

আগের দিন হঠাৎ করে ‘অস্বাভাবিক আচরণ’ শুরু করেন তিনি। শুধু তা-ই না, ওই দিনই প্রাণভিক্ষার দ্বিতীয় আবেদন ছোটে রাষ্ট্রপতির বরাবরে। তিন মাস পর আবেদন গৃহীত হয়। ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করে তার সাজা ১৪ বছরের কারাভোগে নামিয়ে আনেন রাষ্ট্রপতি।

 

আসলাম ফকিরের এই কাহিনী সোমবার প্রকাশ করেছে দৈনিক প্রথম আলো।

যুবলীগের নেতা আসলাম ফকিরকে ফাঁসিকাষ্ঠ থেকে রেহাই দেওয়া এবং তাকে এমনকি কারাগার থেকে মুক্ত করতে কর্তৃপক্ষের বিশেষ তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে। কেননা, তার সাজা মওকুফের আবেদন করা হয়েছে দুবার। প্রথমবার সেটা নাকচ হয়েছিল, দ্বিতীয়বার গৃহীত হয়। এ ছাড়া বিশেষ দিবসে বন্দীদের সাধারণ ক্ষমা লাভের সুযোগ নিয়ে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক চিঠি (ডিও লেটার) দিয়েছেন সংসদ সদস্য নিলুফার জাফরউল্লাহ। তবে এই অনুরোধ কাজে দেয়নি।

বর্তমানে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম। তার ১৪ বছর কারাভোগের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।

মামলার রায়ে বলা হয়েছে, ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের শুকুর ফকিরের ছেলে আসলাম ফকির ২০০৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর একই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম সাহেদ আলী ওরফে সাহেব আলী মিয়াকে হত্যা করেন। দুজনেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে আসছিলেন পালাক্রমে। সর্বশেষ নির্বাচনে পরাজয়ের ক্ষোভ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে আসলাম এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশ তদন্ত শেষে আসলাম ফকির ও তার দুই সহযোগী তারা মৃধা ও ইমারত আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। জেলা ও দায়রা জজ আদালত তিন আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। পরে হাইকোর্ট এ রায় বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্ট আসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তারা মৃধা ও ইমারত আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের ১৯ মে প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন আসলাম ফকির। কিন্তু ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর তা নামঞ্জুর হয়। ফলে ওই বছরের ১৩ নভেম্বর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ধার্য করা হয়।

এ বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু ১২ নভেম্বর বন্দী আসলাম ফকির এমন আচরণ শুরু করেন, কারাগারের নথির ভাষায় যেটা ছিল ‘অস্বাভাবিক’ বা ‘অসুস্থতা’। এর ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করা হয় এবং ওই দিনই দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয়।

দ্বিতীয় দফায় প্রাণভিক্ষার আবেদন গৃহীত হয়ে আসলামের দণ্ড হ্রাস করা হয় ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি সদয় ইচ্ছা পোষণ করলে যে কারও ওপর আরোপিত দণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে অবশিষ্ট সাজা মাফ করতে পারেন।

তবে আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, এই বিধান অনুযায়ী কাকে ক্ষমা করা যাবে বা কার সাজা মওকুফ করা যাবে, সে ব্যাপারে কোনো নীতিমালা নেই। অন্যান্য দেশে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা থাকে। নীতিমালা না থাকায় ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে।

দণ্ড হ্রাস করার পাশাপাশি আসলাম ফকিরকে স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়ার সুপারিশও এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি ডিও লেটার দেন সাংসদ নিলুফার জাফরউল্লাহ। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, আসলাম ফকিরকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১৪ বছর কারাদণ্ডের ১০ বছর ১০ মাস তিনি কারাভোগ করেছেন। অর্থাৎ মাত্র ২ বছর ৯ মাস সাজা খাটা বাকি রয়েছে তার।

নিলুফার বলেন, আসলামের বয়স এখন ৫০ বছর। তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। তাই তার অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেওয়া হোক।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য নিলুফার জাফরউল্লাহ বলেন, ‘আমি তার মুক্তি চেয়েছি, কারণ ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক, সে আমাদের দলের লোক, যুবলীগ নেতা।’

অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিলুফারের অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে বলেছে, সাধারণ ক্ষমা শুধু লঘু অপরাধে দণ্ডিতদের ক্ষেত্রে বিবেচ্য। তাই এই আসামিকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা যাবে না।

আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, দুনিয়ার সব দেশেই খুনের আসামির সাজা মওকুফ করা হলে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নেওয়া হয়। তাদের যদি অভিযোগ না থাকে, তবেই হয়তো সরকার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও মামলার বাদী পারুল আক্তারী বলেন, ‘মতামত নেওয়া তো দূরের কথা, আমাদের সঙ্গে আজ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগই করেননি।’

তিনি প্রশ্ন করেন, ‘একজন খুনির প্রাণভিক্ষার আবেদন একবার নাকচ হলে সেটা আবার কীভাবে গৃহীত হয়?’

কারাগারে আসলাম ফকির এখন ভালো আছেন বলে জানান কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান। ফাঁসি কার্যকর করার আগে আসলাম ফকির অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটু পরে মারা যাচ্ছে শুনলে যে কারও অসুস্থ হওয়াই স্বাভাবিক।’

আসলাম ফকিরের মামা রাজ্জাক মাতুব্বর বলেন, তাদের জানা মতে আসলাম ফকির ভালো আছেন। শিগগিরই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফরিদপুর ফিরবেন।

উৎসঃ   আরটিএনএন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x