জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দিতেই বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ (খসড়া) করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি বলছে, ‘এই আইন উদ্দেশ্যমূলক এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোতে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির নেতারা এসব মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ (খসড়া) ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বিএনপি।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নাগরিকত্ব আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সরকারের কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দেওয়া। ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাকে আরও সংহত এবং তাদের প্রটেকশন দেওয়াই হচ্ছে এ আইনের উদ্দেশ্য।
সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে একের পর এক আইন করে যাচ্ছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দুঃসময় অতিক্রম করছি। সে দুঃসময় হচ্ছে মৌলিক অধিকারগুলোকে হরণ করে নীলনকশা বাস্তবায়ন করার। এর মূল লক্ষ্য সমাজকে বিভক্ত করে তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা।’
যে কোনো আইন করার আগে এ নিয়ে নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা ও সভা-সেমিনার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, নাগরিকত্ব খসড়া আইনটিতে কিছু কিছু সেকশন আছে, যা সংবিধানবিরোধী।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, একটি আইন দিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করা যায় না। মানুষ জন্মগতভাবেই কোনো না কোনো দেশের নাগরিক হবে- এ আইনে সেটি লঙ্ঘন হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, নাগরিকত্ব আইন বিদ্বেষমূলক ও উদ্দেশ্যমূলক। এই আইন হলেও সুপ্রিম কোর্টে টিকবে না। এটি পদে পদে সাংঘর্ষিক হবে।
সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, সরকারি দলের যারা বিদেশি নাগরিক আছেন, তারা তাদের নাম প্রকাশ করুক। এখনই নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করার দরকার নেই বলে মনে করেন তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, তড়িঘড়ি করে নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একই সঙ্গে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। নির্বাচিত সংসদেই এই নাগরিকত্ব আইন পাস করা উচিত।
আলোচনা সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের অনেকেই বাইরের কিছু দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা এই নেতাদের নামের তালিকা দেশবাসীর সামনে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খানসহ আরো অনেকে বক্তব্য দেন।