ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে ঢাকায় এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। অনেকে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১ বলে জানালেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
ঢাকা থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ-ভারত- মিয়ানমার সীমান্তে ভূমিকম্পের কেন্দ্র। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১২০ কিলোমিটার। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, অফিস ও বাসা-বাড়ির লোকজন আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসে। অনেককে স্বজনদের কাছে ফোন করতেও দেখা গেছে।
প্রিয়আলোর ময়মনসিং প্রতিনিধি তমাল দাস জানান, কুষ্টিয়ায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ সময় বিভিন্ন বাড়িতে ও ভবনে থাকা লোকজন আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসে।
খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক মুজাহিদ কামাল জানান, খুলনায় হঠাৎ চেয়ার-টেবিল-ফ্যানসহ পুরো ভবন কেঁপে উঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দু’বার ঝাঁকুনি দেয়। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি টের পেয়েই খুলনার অধিকাংশ ভবনের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন। সবার মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক আতংক। কিছু সময়ের মধ্যেই সড়কের সকল যানবাহনও দাঁড়িয়ে পড়ে। এমনকি খুলনার শান্তিধাম মোড়স্থ ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগীরাও ভয়ে বের হয়ে আসেন। তবে ভূমিকম্পে নগর বা জেলার কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী আবু কালাম আল বান্না জানান, তিনি ভূ-কম্পনের সময় নগরীর শেরে বাংলা রোড দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ মোটর সাইকেল দুলতে থাকে। এতে প্রথমে তিনি ভয় পেয়ে যান। পরক্ষণেই ভূমিকম্প বুঝতে পেরে নিরাপদ স্থানে দাঁড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া নগরীর শান্তিধাম, কাকলিবাগ, টুটপাড়া ও ফুল মার্কেট এলাকায় দেখা যায়, ভূ-কম্পনের আতংকে এলাকার বিভিন্ন ভবন থেকে লোকজন রাস্তায় নেমে এসেছে। বিশেষ করে নারী-পুরুষ ও শিশুরা বেশি আতংকিত হয়ে পড়েন।
গাজীপুর প্রতিনিধি মেহেদী মারুফ জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে মৃদু ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে। শহরের বড়বাড়ীর স্কুলছাত্র জান্নাতুল ফরেদৌস রাতুল বলেন, ‘আমি ঘরের মধ্যে খাটে বসে বই পড়ছিলাম। হঠাৎ করে খাট লাফালাফি শুরু কর। আমি ভয়ে বাইরে বের হয়ে যাই।’
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি শামসুর রহমান জানান, ভূমিকম্পে শহরের বড় বড় দালানগুলোর বাসিন্দারা আতংকে বের হয়ে আসে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বলেন, ভূমিকম্পের সময় দোতলাতে ছিলাম। দ্রুত নিচে নেমে আসি। জেলায় কত মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোথাও ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে কিনা তাও জানা যায়নি।
এ ছাড়াও সিলেট, বরিশাল,কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, ঝিনাইদহেও ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্প : আহত ১০, চট্টগ্রামে হেলে পড়েছে শপিং কমপ্লেক্স
ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম নগরীর আমতল মোড় এলাকায় একটি বহুতল শপিং কমপ্লেক্সে হেলে পড়েছে আরেকটি শপিং কমপ্লেক্স। ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে শাহজালাল হলের ডাইনিং থেকে দৌড়ে দেয়াল টপকানোর সময় উল্টে পড়ে যান তিনি (চবির মার্কেটিং বিভাগের রায়হান)। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে চবি মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগ এলাকার একটি মাদরাসার বেশ কয়েকজন শিশু
আহত হয়েছে। পরে আহতদের মগবাজারে ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া আরও ৪ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।