নিজস্ব প্রতিবেদক: টঙ্গির ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাদকের এজেন্ট গড়ে তোলেছেন ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা। এই এজেন্ট দিয়ে পুরো টঙ্গির মাদকের বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেছেন। শুধু কি মাদক, দখলবাজি, চাঁদাবাজিতে তার নাম। স্থানীয়দের নিকট এ ছাত্রনেতা এখন আতঙ্কের নাম। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে ছাত্রলীগে নাম লিখানোর পর এখন সে কোটি টাকার মালিক। মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করে খুব অল্প বয়সেই বনেগেছেন কোটিপতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টঙ্গির বিভিন্ন ওয়ার্ডে গড়ে তোলেছেন তার নিজস্ব বাহিনী যাদের দিয়ে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা ধরনের অপকর্ম করছে যা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই সকল অপকর্মের পিছনে রয়েছে শক্তিশালী মদদদাতা ও পৃষ্ঠপোষকতা।
আহসান উল্লাহ মাষ্টারের হত্যা মামলার আসামী আনুর ভাগিনা আরিফ ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। আরেক আসামী আমিরের ছেলে সোহেল রানার ইয়াবার এজেন্ট। ৪৪ নং ওয়ার্ডে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ কয়েক বছর পূর্বে সোহেল রানার খালাত ভাইসহ লোকমানকে আটক করে পুলিশ। ৪৫ নং ওয়ার্ডে রয়েছে নাজমূল, ব্লাক মনির, সোহেল রানা। পারভেজ নামের একজন এখন মাদক মামলায় কারাগারে রয়েছে।
৪৬নং ওয়ার্ডের আমতলী নওগাঁ স্কুলের পিছনে আমজাদ মিয়ার বাড়ীতে থাকে রহিম ও তার মাসহ মাদক ব্যবসা করে সোহেল রানার সহযোগী হিসাবে। রহিমা বর্তমানে জেলে রয়েছে। উজ্জ্বল ২ হাজার ২শ’ পিস ইয়াবাসহ আটক রয়েছে। কাইয়ুম, মুক্তা, সাগর, সিজান ও সিজানের বউ। ৪৭নং ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসায় জড়িত চুল ওয়ালা রাসেল। ৫৫ নং ওয়ার্ডের মাসুম গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে চলে ইয়াবা ব্যবসা,যার সেলটার দাতা হলো সোহেল রানা। ৪৮ নং ওয়ার্ড থেকে দত্তপাড়া দিগিড় পাড় থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্র হয় কাইয়ুম, মাসুদ ইউসুপ গ্রুপের মাধ্যমে। জানা যায়, বিশবছর পূর্বে ময়মনসিংহ গফরগাঁও থানার পাগলা গ্রাম থেকে মা,বাবা ও দুইবোন নিয়ে দুলাভাইয়ের ভিক্ষাভিত্তির উপর নির্ভর করে গাজীপুর জেলার টুঙ্গি রেলস্টেশন কোয়াটারের বস্তিতে ভাড়া থাকতো সোহেল রানা। সোহেল রানার পিতার নাম মৃত মকবুল মিয়া, মাতা মৃত আয়শা বেগম। প্রতিদিন সোহেল রানা নিজের বোনের জামাই অন্ধ ভিক্ষুক জাহাঙ্গীর কে ভিক্ষা ভিত্তি করার জন্য হাত ধরে ধরে দিয়ে আসতো এবং রাতে নিয়ে আসতো। দুলাভাইয়ের উপার্জনের টাকা দিয়ে নিজের ও বোনের সংসার চলতো।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এইভাবে হটাৎ সে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের মেলামেশা করতে করতেই প্রভাবশালী হয়ে উঠে। বর্তমানে টঙ্গির এক আতংকের নাম হয়ে উঠেছে সোহেল রানা।
তাদের অভিযোগ, শুধু মাদকের ব্যবসা নয়, টঙ্গির পূর্ব ও পশ্চিম থানায় ক্যাবল ব্যবসা থেকে শুরু করে নেট ব্যবসা ও বর্জ্য ব্যবসাও রয়েছে তার দখলে। টঙ্গি ষ্টেশনের বিভিন্ন হোটেল থেকে চাঁদা নেয় সোহেল রানার সহযোগীরা। মহাখালী থেকে ভৈরব চলাচল করে যে সকল পরিবহণ সেখান থেকে চাঁদা পায় সোহেল রানা। এছাড়াও আতাউর কাউন্সিলরের স্ত্রীর জায়গা দখল করে নিয়েছে সোহেল রানা গ্রুপ। বিসিকেরও নিয়ন্ত্রন তার হাতে। কেউ যদি তার কথা না শুনে তবে কর্মীদের দিয়ে আন্দোলন করে হেনস্থা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সোহেল রানা দাবি করে বলেন, তার জানামতে তার কোন কর্মী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। তবে তার কোন কর্মী যদি মাদকব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। চাঁদাবাজির অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
টঙ্গি পূর্ব থানার ওসি জাবেদ মাসুদ বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই থানায়। কেউ যদি অভিযোগ করে তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।