নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : চারপাশ নদীতে ঘেরা অন্যতম অঞ্চল হিসেবে পরিচিত বরিশাল। তাই এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নদীপথ। আর সেই নদীপথে নৌযান বন্ধ থাকায় গত দুদিন ধরে ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
সর্বনিম্ন মজুরি ১০ হাজার টাকা করাসহ ১৫ দফা দাবিতে বরিশালসহ সারাদেশে আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট চলছে।
যদিও যাত্রী ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ঢাকা-বরিশাল-ঝালকাঠি ও পটুয়াখালী রুটে কিছুসংখ্যক লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত হলেও অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীরা আছেন মহাবিপাকে।
তথ্যমতে, সারাদেশে নৌপথে চলাচলকারী নৌযানের সংখ্যা ২০ হাজারের অধিক। এর মধ্যে এক হাজার নৌযান যাত্রীবাহী। আর বাকিগুলো পণ্য, বালু, তেলবাহী। যাত্রীবাহী নৌযানে কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করে থাকেন।
এদিকে বরিশাল অঞ্চল নদীবেষ্টিত হওয়ার নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীদের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ এ অঞ্চলের বাসিন্দা।
বরিশাল বিভাগে চলাচলকারী বিভিন্ন ধরেনর লঞ্চের সংখ্যা প্রায় ২০০। আর রুটের সংখ্যা অর্ধশত। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা ৫৩টি। আর রুটের সংখ্যা ৩৮টি। এ ছাড়া বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা ১৫টি।
এ বিভাগ থেকে এসব লঞ্চে প্রায় দুই লাখ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন। ফলে ধর্মঘটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এদিকে আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালে। ঢাকা-বরিশাল রুটের ন্যায়ে অভ্যন্তরীণ প্রতিটি রুটে একটি লঞ্চ ছাড়াবে এমন আশা নিয়ে শ্রমিক নেতাদের কাছে অনুরোধ করেছিলন যাত্রীরা।
কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ার পর্যন্ত তারা একটি লঞ্চও ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দেন।
তবে নৌযান ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন আজ বরিশাল থেকে বিকেল ৩টায় ছেড়ে গেছে গ্রিন লাইন। এ ছাড়া রাতে বরিশাল থেকে পারবত-২ ও সুন্দরবন-৮ লঞ্চটি ঢাকা উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের পরিদর্শক মো. আখতার হোসেন।
অন্যদিকে নৌযান ধর্মঘটের কারণে জরুরি প্রয়োজনে অনেক যাত্রীকে বৈশাখে উত্তাল নদীপথে ছোট ট্রলার কিংবা স্প্রিডবোটে করে গন্তব্য স্থানে যেতে দেখা গেছে। এতে করে ঝুঁকিমুখে রয়েছেন যাত্রীরা।
এ ছাড়া লঞ্চের যাত্রীরা ভিড় করেছে বাসে। এ কারণে অভ্যন্তরীণ ও ঢাকা-বরিশাল রুটে অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ আফতাব হোসেন।