1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
চরম দৈন্যদশায় দেশের ফুটবলাঙ্গন - প্রিয় আলো

চরম দৈন্যদশায় দেশের ফুটবলাঙ্গন

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৪০
Images 6 1

ফুটবল অঙ্গনে এখন আলোচিত নাম তরফদার রুহুল আমিন। পেশায় ব্যবসায়ী। তবে সেই পরিচয় ছাপিয়ে তিনি এখন পরিচিত ফুটবলের মানুষ হিসেবে। মাত্র চার বছর আগে ফুটবল সংগঠক হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে ফুটবলকে এগিয়ে নিতে অনেক কিছুই করছেন। মূলত তার উদ্যোগেই তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামে আয়োজিত হচ্ছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ। চট্টগ্রাম আবাহনীর সহ-সভাপতি ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। এছাড়া দাবা ও সাঁতার ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবেও আছেন তিনি। গতকাল নিজের ফুটবল ভাবনা নিয়ে অনেক কথাই বললেন; সিনিয়র জার্নালিস্ট লায়ন জে. জাহান চৌধুরী’র সঙ্গে। যার চুম্বক অংশ এবারের সাক্ষাৎকারে।

ছবি: তরফদার রুহিল আমিন।

প্রশ্ন : শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ দিয়ে একটা পথচলা শুরু করেছিলেন। দেখতে দেখতে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত হচ্ছে এই আসর। আয়োজনটি নিয়ে বলুন।

তরফদার রুহুল আমিন : ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলকে জাগানোর লক্ষ্য নিয়েই আমরা আসলে ২০১৫ সালে এই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করি। বলতে পারেন একটা যাত্রা শুরু হয়। তিন-চারটা উদ্দেশ্য ছিল। যিনি স্বাধীনতাপরবর্তী এদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন যুবসমাজকে একত্রিত করার জন্য, আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা সেই শেখ কামালের স্বপ্ন ছিল দেশের ফুটবলকে বিশ্বমানে নিয়ে যাওয়া। সেই স্বপ্ন কিন্তু পূরণ হয়নি তার। কারণ হলো এই ৪০ বছরের ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অদক্ষতা এবং ব্যর্থতা। শেখ কামালের স্বপ্নটাকে বুকে ধারণ করে চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে আমরা চিন্তা করেছি ওনাকে বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করার। যাতে বিশ্ব জানতে পারে শেখ কামাল ছিলেন এদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবক্তা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে গোটা দেশের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলকে জাগিয়ে তোলা। একটা কম্পন সৃষ্টি করা। আন্তর্জাতিক একটি আসর যখন আয়োজিত হবে তখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে এর উন্মাদনা। সবাই আগ্রহী হবে ফুটবল খেলতে। আমি মনে করি সেই উদ্দেশ্যগুলো আমরা সফল করতে পেরেছি। গত দুবারের তুলনায় এবার এই আসরের মান অনেক বেড়েছে। প্রতিটি ম্যাচ দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্লাবপর্যায়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এটাই প্রথম। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায়ও এ রকম মানের টুর্নামেন্ট আর হতে দেখিনি। আমরা চট্টগ্রাম আবাহনী যেটা করছি, সেটা আসলে করার কথা ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। কিন্তু তারা সেটা করেনি।

প্রশ্ন : আপনি একাধারে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব, বাংলাদেশ ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। ফুটবলের সঙ্গে এই সখ্য গড়ে উঠল কবে থেকে?

রুহুল আমিন : ফুটবলের প্রতি আমার অনুরাগ ছোটবেলা থেকেই। চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গেও সম্পৃক্ততা অনেক দিনের। তবে চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির দায়িত্ব নেই ২০১৪ সালে। দায়িত্ব নিয়ে পরের বছরই শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ আয়োজন করি। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে বাফুফের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে থাকি। একটা সময় প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে সবকটি লিগ এবং অনেকগুলো ক্লাবকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছি। এভাবেই আসলে আমি একজন পুরোদস্তুর ফুটবলের মানুষ হয়ে গেছি।

প্রশ্ন : বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে একটা সময় আপনার সুসম্পর্ক ছিল। এখন তো দুজনে মুখোমুখি অবস্থানে…

রুহুল আমিন : ২০১৬ সালে বাফুফে নির্বাচনে আমি ছিলাম কাজী সালাউদ্দিন নেতৃত্বাধীন প্যানেলের প্রধান সমন্বয়ক। কারণ, তখনো ভাবতাম ফুটবলকে বাঁচাতে পারবেন সালাউদ্দিন ভাই। সে সময় আমরা একটা ইশতেহারও তৈরি করেছিলাম, যা পাঠ করার দায়িত্ব ছিল আমার। কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর থেকেই সালাউদ্দিন ভাইয়ের ভিন্ন চেহারা দেখতে শুরু করি। ইশতেহারে উল্লিখিত প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণের কোনো তাড়া দেখিনি তার মধ্যে। নির্বাচনের পর তিনি জেলা ও বিভাগীয় কমিটি গঠন করে আমাকে ডেপুটি চেয়ারম্যান করেন। কিন্তু একটি সভা করতে না দিয়েই তিনি সব কমিটির মতো এই কমিটিও ভেঙে দেন। তখন থেকেই আসলে দূরত্বের শুরু। ব্যক্তি সালাউদ্দিনকে এখনো আমি খুব পছন্দ করি। বুকে ধারণ করি। কিন্তু বাফুফের সভাপতি হিসেবে যেভাবে ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটা তিনি পারেননি। গত নির্বাচনের আগে আমরা চেয়েছিলাম একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় ফুটবলকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু তিনি সেটা করতে দেননি। পরবর্তীতে ফুটবলে পৃষ্ঠপোষকতা থেকেও আমাদের বঞ্চিত করেছেন তিনি। আমাদের আর স্পন্সর করতে দেননি। এসব মিলিয়ে ওনার সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হওয়ায় আর ওনার সঙ্গে থাকা সম্ভব হয়নি। আসলে এখন ফুটবল ভঙ্গুর অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়বে।

ছবির বা’পাশে তরফদার রুহুল আমিন এবং ডানে কাজী সালাহ উদ্দিন।

প্রশ্ন : সালাউদ্দিন এবং আপনি দুজনেই নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন…

রুহুল আমিন : গত নির্বাচনের আগে তিনি প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছিলেন আর নির্বাচন করবেন না। অথচ এখন আবার তিনি নির্বাচন করতে চাইছেন। আর আমি ফুটবল নিয়ে অনেক কিছুই করার চেষ্টা করছি। বাফুফের বাইরে থেকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের হয়ে কাজ করছি। এতে হয়তো ফুটবলকে একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু ফুটবলের সত্যিকারের উন্নতি করতে হলে বাফুফের মাধ্যমেই করতে হবে। আর বাফুফের মাধ্যমে কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে হতে হবে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। আমাকে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আগামী নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরে বাফুফের এজিএমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলের জন্য। এখানে কাউন্সিলররা বাফুফের দুই সহ-সভাপতির (বাদল রায় ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহি) তোলা প্রায় ২০ কোটি টাকার আর্থিক অসঙ্গতির বিষয়ে জানতে চাইবেন।

প্রশ্ন : বাফুফে সভাপতি না হলে কি ফুটবল ছেড়ে দেবেন?

রুহুল আমিন : এটা তো এখন বলা কঠিন। তবে যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা বড় আকারের বিনিয়োগ করছি, সেটা সঠিকভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ না পেলে হয়তো ফুটবলে আর বিনিয়োগ করব না। তবে ফুটবল ছাড়ার তো কোনো কারণ নেই। কারণ, এই খেলাটাকে ভালোবাসি বলেই তো এখানে আছি।

প্রশ্ন : বিভাগীয় ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠনের গল্পটা বলুন?

রুহুল আমিন : ফুটবল আসলে বাঙালির রক্তে মিশে গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এটি কেউই প্রমোট করছে না। আমরা একটা প্ল্যাটফর্ম করেছি আসলে ফুটবলে ছড়িয়ে দিতে। জেলাগুলো যাতে নিয়মিত লিগ আয়োজন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে। তাদের দাবি-দাওয়াগুলো আদায়ে এই সংগঠনের রয়েছে বড় ভূমিকা। আসলে ফুটবলটা যেভাবে চলছে, সেভাবে এটা চলতে পারে না। আমরা এখন র‌্যাংকিংয়ের তলানিতে রীতিমতো ধুঁকছি। কিন্তু ফুটবলকে জাগাতে হলে যেতে হবে তৃণমূলে। সেখান থেকে তুলে আনতে হবে প্রতিভা। আর আপনি প্রতিভা খুঁজে পাবেন কেবল জেলা ও গ্রামেগঞ্জে গেলেই।

প্রশ্ন : নবগঠিত ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে নিশ্চয় খানিকটা বিব্রত আছেন এই মুহূর্তে। বিশেষ করে আপনার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ক্যাসিনো-কান্ডের অন্যতম অভিযুক্ত মমিনুল হক সাঈদ?

রুহুল আমিন : খানিকটা তো বিব্রতই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের পরবর্তী সভাতেই আমরা তাকে বাদ দিয়ে নতুন সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত করব। আসলে ক্রীড়াঙ্গনে ক্যাসিনো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা যারা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

চরম দৈন্যদশায় দেশের ফুটবলাঙ্গন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x