1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
কক্সবাজারে মানবিকতার জন্য তিরস্কার, উঠেছে প্রতিবাদের ঝড় - প্রিয় আলো

কক্সবাজারে মানবিকতার জন্য তিরস্কার, উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭
  • ২১৫
1000

রাইয়ান ওয়াহিদ : স্কুল ছাত্র ফারজিম হাসান ফাহিম, একজন অষ্টম শ্রেনীতে পড়ুয়া, পড়ালেখার পাশাপাশি ব্লাড ডোনার’স এর মত সামাজিক সংগঠনের সাথে স্বেচ্ছায় রক্ত সেবাদান এর কাজ করে। কক্সবাজার সুনামধন্য ডাক্তার সাবেক সিভিল সার্জন জি এম মুবিন (খুসরু)’র নাতী। ২০ তারিখ রাত ১০:৩০ টায় ফাহিম ছুটে গিয়েছিলো কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত যোগাড় করে দেওয়ার জন্য। সেদিন মানবতার সেবা করতে গিয়ে উল্টো সেখানে বাঁধে বিপত্তি। স্কুল ছাত্র ফাহিমের স্ট্যাটাস মতে সে রাতে ফাহিমের জীবনে নেমে আসেছিলো অন্ধকার। পরদিন স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় স্কুল ছাত্র ফাহিমের ছবি দিয়ে “ডাঃ এর যোগসাজশে সদর হাসপাতালে চলছে রক্ত বানিজ্য শিরোনামে সংবাদ ছাপানো হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফাহিমের সহপাঠী, শুভাকাঙ্খী, শুভানুধ্যায়ী ফাহিমকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে তুলছে স্ট্যাটাসে ঝড়, তৈরি করছে ফাহিমেত ছবি সম্মলিত প্রোফাইল পিকচারে ফ্রেম। প্রোফাইল পিকাচারের ফ্রেমে লিখা আছেঃ “মানবতার কাজ করাও কি অপরাধ? মিথ্যা রক্তের দালাল অপবাদ দিয়ে হাতে হাত কড়া পড়িয়ে ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করার প্রতিবাদ। ভয় নাই ফাহিম তোমার আমরা তোমার সাথেই আছি”

পাঠকের সুবিধার্থে ২২ অক্টোবর লিখা ফাহিমের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু প্রকাশ করা হলোঃ

“আমরা যারা মানবতার কাজ করি তারা কৌটু কথা কম শুনিনা এক্ষেত্রে দালাল টা আমাদের জন্য রেগুলার…

কিন্তু যখন এই কাজে কোনো পাওয়ারফুল ব্যাক্তির ইশারায় আমাদের গায়ে হাত তুলে,সারা রাত অমানবিক অত্যাচার করা হয়?? তখন আমি কি করবো কোন দিকে যাবো??

হ্যা আমি সেই ব্যাক্তি যাকে বিনা দোষে পুরোটা রাত আমাকে মারা হয়। কারণ আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।

আমি ফারমিজ হাসান ফাহিম

” আমার নাম ফাহিম। আমি একজন আন্ডার-মেট্টিক স্কুলছাত্র। আমি পড়ালেখার পাশাপাশি ব্লাড ডোনার’স এর মত একটি সামাজিক সংগঠনের সাথে স্বেচ্ছায় রক্ত সেবাদান এর কাজ করি। আমার নানাও একজন ডাক্তার ছিলেন। আমি আমার নানা থেকে কিছুটা হলেও মানব সেবা শিখেছি। এমনকি গভীর রাতেও জরুরী বিত্তিতে আমাকে ঘর ছেড়ে মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত যোগাড় করে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালে যেতে হয়। ঠিক তেমনি ২০ তারিখ রাত ১০:৩০টা বাজে কক্সবাজার সদর হাসপাতেলে ছুটে যায় এক মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত যোগাড় করে দেওয়ার জন্য। রক্তের গ্রুপ ছিলো “অ” পজিটিভ (O+) রক্ত যোগাড় করে দেওয়ার আগে একটি বিষয় লক্ষ করে দেখলাম, রোগীর স্বজনের রক্তের গ্রুপ ছিলো ঠিক “অ” পজিটিভ। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে রোগীর স্বজন আমার সাথে অমায়িক ব্যবহার করে, আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন এবং তার এক পরিচিত এক প্রভাবশালী সাংবাদিক ভাইকে ফোনে আমার সম্পর্কে যা তা বলে। এমনকি সাংবাদিক ভাইটি আমাকে ফোনে রক্তের দালাল বলে কটাক্ষ করে। তবে আমিতো অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে পারলাম নাহ। বিনা দোষে আমাকে দালাল ডাকার কারণে আমি এর প্রতিবাদ করারর চেষ্টা করলে হাসপাতালের ডিউটি তে থাকা এক পুলিশ হাবিলদার দ্বারা আমাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে সারারাত অত্যাচার করতে থাকে এবং আমার হাতে জোরপূর্বক হাতকরা লাগিয়ে আমার ছবি নেওয়া হয়, যা ২১ অক্টোবর এর দৈনিক দেশবিদেশ পত্রিকায় ছাপানো হয়। আমি মনে করি না, সুস্থ মস্তিষ্কের কোন সাংবাদিক ভাই এই ছবি পত্রিকায় ছাপাতে পারে। তবুও হাতকরা লাগানো সেই ছবিটি পত্রিকায় ছাপানো হয়। আমার সাথে নির্মম বর্বরতা চালানোর পরে কক্সবাজার মডেল থানার ওসি জনাব রন্জিত বড়ুয়া পরেরদিন বিচারের আয়োজন করেন এবং বিচারে আমি নির্দোশ প্রমাণিত হলে আমার কাছ থেকে শুধু মাফ চাওয়া হয়, যা সম্পূর্ণ কল্পনার বাইরে ছিলো। আমি চেয়েছিলাম আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার হবে কিন্তু তা হলো না। বরং এতোদিন স্বেচ্ছায় মানবসেবা করার পর আমাকে লাঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। আগে শুধু জানতাম আইনের চোখে সবাই সমান কিন্তু আজকে আবার নতুন করে শিখলাম ক্ষমতবানদের সকলেই অাইনের উর্ধ্বে।

ক্ষমতবানদের কাছে আইন বলতে যেনো কিছুই নেই। ধীক্ষার জানাই বাংলাদেশ এর এইসব চুতিয়া ক্ষমতাবান শ্রেণীর সকলকে এবং ধীক্ষার জানাই ঐসব পুলিশ অফিসারদের, যাদের কারণে আজ বাংলাদেশে আইন বলতে কিছুই নেই। হয়তো এই স্ট্যাটাস দেওয়ার অপরাধে আমাকে গ্রেপ্তার করে জেলে বন্দি করতে পারেন কিংবা রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে আমাকে শাস্তির নামে অত্যাচার করতে পারেন কিন্তু আমি চুপ থাকবো না। খেয়াল করে দেখবেন, বাংলদেশের সংবিধানে স্ট্যাটাস দেওয়ার অপরাধে কাউকে গ্রেপ্তার করার কোন আইন নেই। তবুও কিছু বলবো না বরং আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ আমি চালিয়েই যাবো। দরকার হলে আমার স্কুল, আমার সংগঠন এবং কক্সবাজারের তরুণ সমাজের সকলেই মিলে একসাথে মানববন্ধন করবো তবুও এই অন্যায়ের প্রতিবাদ বন্ধ করবো না এবং ধন্যবাদ আপনাদের সকলকে, যারা আমাকে রক্তের দালাল বলে কটাক্ষ করেছেন!”

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x