ক্রীড়া ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর চার্লস স্ট্রিটে আনুমানিক রাত ১২টায় দেখা টাইগার শোয়েবের সঙ্গে। টাইগার শোয়েবকে চেনেন না, এমন ক্রিকেটপ্রেমী পাওয়া কঠিন! কী খবর, জানতে চাইলে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন, ‘কী আর খবর। কালকের (বুধবার) ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। বিশ্বকাপের ট্রফি আমাদের দরকার নেই। কালকে ওদের (ভারত) হারাতে পারলেই আমরা বিশ্বকাপ জিতে যামু।’
কথাগুলো বলার সময় শোয়েবের কন্ঠ ধরে আসছিল। জড়তা কাজ করছিল। খানিকবাদে কেঁদেই দিলেন। বোঝা গেল, বাংলাদেশের ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের প্রতি কতটা মায়া, ভালোবাসা ও আবেগ তার। মাঠে ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ বলে চিৎকার করা সামান্য অটোমোবাইল মেকানিকও বোঝেন বাংলাদেশ ক্রিকেট ‘রাজনীতির নোংরা পরিকল্পনায়’ প্রবেশ করেছে। অথচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বোদ্ধারা বোঝেন না!
বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট দল ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের লড়াই যতটা না ব্যাট-বলের, তার থেকেও বেশি নিজেদের অস্তিত্ব, আত্মমর্যাদা রক্ষার। মাঠের ভেতরে বাংলাদেশের সঙ্গে না পারার ‘ভয়ে’ মাঠের বাইরে বাংলাদেশকে নিয়ে চলছে ‘গবেষণা’, ‘ষড়যন্ত্র’। যার ফল এরই মধ্যে ভোগ করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। হারিয়েছে দুই ইনফর্ম ক্রিকেটারকে। যারা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রাখছিলেন, বারবার দেশের পতাকা উড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছিলেন।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচকে ঘিরে এখন দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ ভাব চলে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দুই দলের ক্রিকেটভক্তরা নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করছে বিভিন্ন উপায়ে। তবে মাঠের লড়াইয়ে তার প্রভাব ফেলছে না। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ও ভারতের আশিস নেহরা ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই বলে গেছেন। তবে আজকের ম্যাচ দুই দলেরই সেমিফাইনালের পথ খুলে দেবে।
সেমিতে যেতে হলে বাংলাদেশকে শেষ দুই ম্যাচ জিততেই হবে। একই অবস্থা ভারতের। আর যদি কোনো দল হেরে যায় তাহলে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন এখানেই শেষ হয়ে যাবে। তবে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন অনেকটা ছেড়েই দিয়েছে! একটি ম্যাচ বাকি থাকলেও ভারতের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশের ‘অঘোষিত’ ফাইনাল। বাংলাদেশকে অনেক জবাব দিতে হবে এ ম্যাচেই। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণ না হলেও, অন্তত বিশ্বকাপে একটি জয় তো মিলবে। দলের এমন খারাপ সময়ে সেটিই কম কিসের!