সোহানুর রহমানঃ অন্তত দেড়শতাধিক এমপি-মন্ত্রীর জনপ্রিয়তা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকাতে নাজুক বলে বিভিন্ন সংস্থা ও ক্ষমতাসীন দলের জাতীয় নির্বাচন – ২০১৯ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের আলোচনা ও সমালোচনায় উঠে এসেছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কড়া ঘোষণার পর প্রায় সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সময় দিচ্ছেন। বৈঠকে বসছেন নেতা, কর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও আমজনতার সাথে কার্যালয়ে অথবা উঠানে উঠানে। হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনেকে মাটি কাটছেন শ্রমিকদের সঙ্গে, ভরাট করছেন রাস্তার গর্ত।
প্রতিটি আসনেই দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের অংশ হিসেবে জরিপের পর জরিপ চলছে পর পর দু’বার সরকার পরিচালনায় ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার এসব জরিপ প্রক্রিয়ায় জড়িত ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ফুটে উঠেছে, জরিপে বর্তমান সংসদের ৫০ জন সাংসদ ও ১৭ জন মন্ত্রীর জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধ্বসের চিত্র।
উচ্চপর্যায়ের সূত্রগুলো বলছে, অনেক তরুণ কিন্তু প্রতিভাবান জনপ্রিয় নেতাদের হাতেও এবার আসতে পারে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করার সুযোগ। তবে কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান মন্ত্রীদের মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম কৌশলগত কারনে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি জেলায় অন্তত দু’একটি আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হবে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে, নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ও আলোচনা ছড়ানো এবং কর্মীদের চাঙ্গা রাখার জন্য হলেও প্রতি জেলায় অন্তত একটি আসনে প্রার্থী বদল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত আছে আওয়ামী লীগ হাই কমান্ডের। সে হিসাবে ৬৪ জেলায় অন্তত ৮০ থেকে ৯০টি আসনে নতুন মুখ আসতে পারে। আবার বার্ধক্যের কারণে বাদ পড়বেন বেশ কয়েকজন বর্তমান এমপি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা মেনে কোন্দল মিটিয়ে দলীয় কর্মীদের মাঠে নামাতে পারলে জিতে আসতে পারবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দিবানিশি। দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন কারণে বাকি মন্ত্রীদের বেশ কয়েকজন মনোনয়ন বঞ্চিতও হতে পারেন।
বৃহত্তর বরিশাল বিভাগকে আরও সংঘটিত করতে, ঢাকা মোহাম্মদপু-আদাবর-শেরেবাংলা সাংসদ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক-কে আসন পরিবর্তন করে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বরিশালের কোনো একটি আসনে। নেত্রকোনায় উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের আসনে আসতে পারেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। আর ২০০৯ এর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-০১ আসনের মোস্তাক আহমেদ রুহি জনপ্রিয়তার জোরেই আবার টিকেট পেতে পারেন নৌকা প্রতীকের।