জিপিএ ৫ অদ্বৈতকে পদ্মা পাড়ি দিতে দিবো না বলে ঘোষণা দিলেন ফরিদপুরবাসী
আপডেট সময়
বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১৮
৩৪৩
অদ্বৈতকে পদ্মা পাড়ি দিতে দিবো না
অদ্বৈতকে পদ্মা পাড়ি দিতে দিবো না
ইলিয়াসমাহমুদঃ ‘আমরা কি ডাস্টবিন নাকি? আমাদের কেন পচা মাল গছিয়ে দেয়া হবে?’-সোহেল মাহবুব নামের রাজেন্দ্র কলেজের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী এমন মন্তব্য করেন। একইসাথে দুর্নীতিগ্রস্ত কোনো কর্মকর্তাকে কলেজের শিক্ষক হিসেবে মেনে নিতে পারবেন না বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ফরিদপুরবাসী।।
ঐতিহ্যবাহী রাজেন্দ্র কলেজের ফেসবুক পেইজ “শতবর্ষী রাজেন্দ্র কলেজ: আমার ভালোবাসা” নামের ফেসবুক পেইজে আব্দুল্লাহ বিপ্লব লিখেছেন, জিপিএ-৫ মহাজন অদ্বৈত বাবু নাকি প্রাণের রাজেন্দ্র কলেজে যোগ দিচ্ছেন। এতো মনিষীর মাঝে এমন একটা পচা মালের নাম থাকবে! প্রতিবাদ হোক, যাতে কলঙ্কিত না হয় আমাদের প্রাণের কলেজ’। ‘ফরিদপুর সিটি’ ফেসবুক পেইজে ভিডিওটি শেয়ার করার পর মৌমিতা আলো নামে একজন পোষ্টটি শেয়ার করে লিখেন, ‘কি বলবো দাদা, এটা তোমাদের বাংলাদেশ’।
অদ্বৈতকে পদ্মা পাড়ি দিতে দিবো না
এরপরই প্রতিবাদের ঝড় বইতে থাকে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ নানা মন্তব্য করছেন। অদ্বৈত কুমার রায়কে শিক্ষা ‘দৈত্য’ আখ্যা দিয়ে হাজী আবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক ফয়সাল ইবনে মোস্তফা বলেন, ‘অদ্বৈতকে পদ্মা পাড়ি দিতে দিবো না।’
রাজেন্দ্র কলেজের আর এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম তার মন্তব্যে বলেন, ‘জুতার মালা দিয়ে শুরু করা হোক’। আইয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তি তার মন্তব্যে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কি কোন প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই? প্রমাণ স্বরুপ এত বড় দুর্নীতির পরেও তার চাকরি থাকে কিভাবে?
‘কী অদ্ভুত আমাদের দেশ’-লিখেছেন তাহনিম মাহমুদ। ‘এই নোংরা আবর্জনার কোনো বিচার কি হবে না? । এত বড় একটা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পরেও বিচার না হয়ে ঐতিহ্যবাহী কলেজে পোস্টিং। ও কী শেখাবে ছাত্রদের? ওর নিজেরই তো কোন নৈতিকতা নাই। ওকে নতুন করে পাঠশালায় ভর্তি করাতে হবে।’
সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
সুধাংশু বিশ্বাস লিখেছেন, কুলাঙ্গার শিক্ষককে পূর্বে এ কলেজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার রেকর্ড আছে। তাই তীব্র প্রতিবাদের পক্ষে বলছি, কলেজ প্রশাসন সব জেনেও ওনাকে যেন কলেজের গেট মাড়াতে না দেয়। জেনে শুনে তো আর বিষপান করা যায় না।‘
তাহমিনা আক্তার মন্তব্য করেছেন, এতো জেলা থাকতে প্রশাসনকে এই অসভ্যটাকে কিনা ফরিদপুর দিতে হলো? ওএসডি করে রাখলেই পারত। পরিবেশ নষ্ট’। শাহিদ হাসান লিখেছেন, এই জিপিএ- ৫ বিক্রেতা যদি আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন রাজেন্দ্র বি কলেজে যোগদান করে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ আঙুল তুলবে। এত বড় সুপার স্টার ব্যক্তিকে কোন বিদেশী মিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হোক যাতে বিদেশ থেকে ভুয়া ও জাল ভিসা পাঠাতে পারে । তাই এই জালিয়াত যাতে ফরিদপুর ঢুকতে না পারে।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১১ই জুন, ২০১৮ইং চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহামুদ-উল-হক কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। এ কমিটি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
মাছরাঙা টেলিভিশনে গত ৯ জুন ‘বিক্রি হচ্ছে জিপিএ ফাইভ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার হয়। একইদিনে দৈনিক শিক্ষা ডট কমে তা ভাইরাল হয়। ওই প্রতিবেদনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার একজন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায় এবং বোর্ডের একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ উত্তরা এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-প্রধান জিপিএ ফাইভ বিক্রির সাথে জড়িত মর্মে উল্লেখ করা হয়।