সংবাদ প্রকাশের জেরে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে হামলার পরিকল্পনা করেন। হামলার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্নস্থানে বাবুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। আর ঘটনার পাশে থেকেই বাবু নির্দেশনা দিয়েছেন।
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সাংবাদিক নাদিম হত্যায় ২৫ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এর মধ্যে প্রধান আসামি বাবু চেয়ারম্যানসহ কিলিং মিশনে থাকা ৪ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সাংবাদিক নাদিম সম্প্রতি বাবুর বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও করেন। পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ায় বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন।
গত ১৪ জুন রাত ১০টা ১৭ মিনিটের ঘটনা, পাশপাশি দুই মোটরসাইকেলে সহকর্মীর সাথে বাসায় ফিরছিলেন নাদিম। এ সময় তাকে পেছন থেকে দৌড়ে টান দিয়ে ফেলে দেয় রেজাউল নামে একজন। এরপরই তাকে ঘিরে ধরে ১০-১২জন।
এ ঘটনায় অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর ধরা পড়লেন বাবু চেয়ারম্যান। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাসায় পালিয়ে থাকার সময় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
নাদিম হত্যার দুই দিন পর জামালপুর বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এতে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত অন্তত ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে চেয়ারম্যান বাবুকে।
উল্লেখ্য, নাদির হত্যার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সাত দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে সন্ত্রাসী হামলার পরদিন হাসপাতালে মারা যান সাংবাদিক নাদিম।