‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ইত্যাদি নানা স্লোগানে উত্তপ্ত কলকাতা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা মুখোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো পশ্চিমবঙ্গ।
বিক্ষোভকারীরা সেখানকার সচিবালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছেন কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে পড়ছেন। তবু স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ মাতোয়ারা করতে পিছপা হচ্ছেন না তারা। কলকাতা যেন এক খণ্ড বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তারা হয়তো অনুপ্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন। তাই কলকাতাবাসীর কণ্ঠে শোভা পাচ্ছে
বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার স্লোগান– ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’! যে স্লোগানের সূতিকাগার বাংলাদেশ।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মহাত্মা গান্ধী সড়ক, কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, সাঁতরাগাছি, হাওড়া সেতুতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ইটের আঘাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদদ্যের মাথা ফেটে গেছে।
বিক্ষোভের মুখে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দেয়ার খবর এসেছে। সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় সবাই মেট্রোতে করে গন্তব্যে ছোটার চেষ্টা করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত আরজি কর হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করছে সেখানকার শিক্ষার্থীরা। এরপর এটি মমতার পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়। ‘দফা এক দাবি এক, মমতার পদত্যাগ’ প্ল্যাকার্ডে এমন স্লোগান লিখে রাস্তায় নেমেছে তারা।
মঙ্গলবার সকালে ‘নবান্ন অভিযান’-এর নামে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি সফল করতে হাওড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙ্গার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। দফায় দফায় টিয়ারগ্যাসও ছোড়া হয়। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশের অভিযানে আহত হয়েছেন অনেকে। পদযাত্রাকে সামনে রেখে সকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে কড়া নিরাপত্তা নেয় পুলিশ।
এদিকে, ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়াতে আগামী বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা বন্ধের (সাধারণ ধর্মঘট) ডাক দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলা বন্ধের কথা ঘোষণা দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এই সাধারণ ধর্মঘট।