লন্ডন প্রতিনিধি: যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম সম্প্রতি এক ব্যতিক্রমধর্মী ও প্রভাবশালী আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেছেন। লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব আয়োজিত এ আয়োজন ‘কমিউনিটি কুয়েশ্চন টাইম উইথ হাইকমিশনার’ অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেল ৫টায়, লন্ডনের কমার্শিয়াল রোডে অবস্থিত লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে।
পাঁচ মাস আগে যুক্তরাজ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মতো তিনি সরাসরি কমিউনিটির মুখোমুখি হলেন এমন একটি প্রশ্নোত্তর অধিবেশনে। আবিদা ইসলাম অত্যন্ত খোলামেলা, আত্মবিশ্বাসী ও কূটনৈতিক দক্ষতায় প্রশ্নগুলোর জবাব দেন।
তিনি বলেন, “আমি এখানে এসেছি দায়িত্ব নিয়ে, প্রবাসীদের সঙ্গে বাস্তব যোগাযোগ গড়ে তোলাই আমার অগ্রাধিকার। স্বচ্ছতা, কার্যকারিতা ও আন্তরিকতা। এই তিনটি স্তম্ভে আমাদের হাই কমিশন কাজ করছে।”
তাঁর আলোচনায় উঠে আসে- কনস্যুলার সেবার মান উন্নয়ন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নির স্বচ্ছতা, বাংলাদেশ হাউসের ফান্ড ব্যবস্থাপনা,
এবং ডায়াসপোরার প্রতিনিধিত্বে নেতৃত্বের ভূমিকা।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি কনস্যুলার তথ্য, মিডিয়ার স্বাধীনতা, হাই কমিশনের বার্তা ব্যবস্থাপনা এবং প্রবাসী ইস্যুতে হাই কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করে তুলে ধরেন। আকবর হোসেনের জবাব ছিল তথ্যনির্ভর, যুক্তিসম্মত এবং দায়িত্বশীল। যা উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশংসা কুড়ায়।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের এবং সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ পুরো অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে পরিচালনা করেন।
বক্তব্য ও প্রশ্ন উত্থাপন করেন- ইকবাল আহমদ ওবিই (ইউকেবিসিসিআই চেয়ারম্যান), ওলি খান এমবিই (ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট), সলিসিটর দেওয়ান মাহদী, সলিসিটর নুরুল গাফফার, দেলওয়ার হোসাইন এবং এ মুহিত সহ আরও অনেকে।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি জুবায়ের বলেন, “এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আশা করি অন্তত আলোচনা শুরু হবে। জবাবদিহিতার পরিবেশ থাকুক, এটাই আমাদের চাওয়া।” অনুষ্ঠান শেষ হয় সহ-সভাপতি তারেক চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ সালেহ আহমেদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল শুভেচ্ছা ও উপহার। এই অংশে প্রেস ক্লাবের নির্বাহী সদস্যরা হাই কমিশনার ও অন্যান্য অতিথিদের ফুল ও উপহার দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
এই আয়োজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সরাসরি সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আবিদা ইসলাম ও আকবর হোসেনের মত সাহসী, স্বচ্ছ ও জনগণের মুখোমুখি কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে ভবিষ্যতের পথে আলো ছড়াবে বলে মত বিশ্লেষকদের।