1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
শিরোনাম
শত পার্থক্য থাকলেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই: ধর্মীয় নেতাদেরকে প্রধান উপদেষ্টা চেন্নাইয়ে বাংলাদেশ বিরোধী বিক্ষোভ, নারীসহ গ্রেফতার ৫০০ জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন কাজী নজরুল, নিউজিল্যান্ডে হবে হাইকমিশন ডুবে যাওয়া ভারতীয় কার্গো জাহাজের ১২ জন ক্রু’কে উদ্ধার করলো পাকিস্তানের নৌ বাহিনী আরও এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো শাহজাহান ওমরকে দেশের সার্বভৌমত্ব ইস্যুতে কাদের ‘নীরব’ বলে ইঙ্গিত করলেন আসিফ নজরুল? রাষ্ট্রপতির সাথে হাইকোর্টের নতুন বিচারপতিদের সাক্ষাৎ ইসির নতুন সচিব আখতার আহমেদ দলের স্বার্থে ওপেনিং পজিশন ছাড়লেন রোহিত শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে আদালত এখনো চিঠি দেয়নি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে ‘অশালীন অঙ্গভঙ্গি’, ক্ষুব্ধ শ্রীজাত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৯
Sreejat Risingbd 2411010737

ভারতের জনপ্রিয় কমেডিয়ান কপিল শর্মা। তার সঞ্চালিত নতুন অনুষ্ঠান ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ শো-ও জমিয়ে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এরই মাঝে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এ শোয়ের একটি পর্ব। কারণ বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘একলা চলো রে’ গান নিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগ তুলেছেন ওপার বাংলার কবি, গীতিকার ও নির্মাতা শ্রীজাত।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন শ্রীজাত; যা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। তাকে সমর্থন জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের অনেক শিল্পী, কলাকুশলী মন্তব্য করেছেন।

শুরুতে কপিল শর্মার প্রশংসা করে শ্রীজাত বলেন, ‘অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী কপিল শর্মার আমি একজন অনুরাগী। প্রতিভা, পরিশ্রম, অধ্যবসায়, লড়াই, কোনোটারই অভাব তার ছিল না। সেই কারণে আজ যশ-খ্যাতি, অর্থ বা প্রতিপত্তিরও অভাব নেই। এমনটা হলেই আমার ভালো লাগে। এই রূপকথার মতো উত্থান, এই রাস্তা থেকে রাজপ্রাসাদের সফর। কৌতুকরসকে টেলিভিশন বা ওটিটির পর্দায় অন্য মাত্রায় তুলে নিয়ে যাওয়ার পেছনে তার অবদান অনস্বীকার্য, শৈল্পিক ও বাণিজ্যিক, উভয় প্রেক্ষাপটেই। অবশ্য তিনি একা নন, এ ধরনের বড় অনুষ্ঠান প্রযোজনা করতে গেলে অনেক মাথাকে এক করতে হয়, যারা একটি বিরাট কর্মযজ্ঞকে নানা দিক থেকে আগলে নিয়ে একসঙ্গে এগোতে পারেন।’

দেশ-বিদেশের কম তারকাই আছেন, যারা এখনো কপিল শর্মার শোয়ে যাননি। এ তথ্য উল্লেখ করে শ্রীজাত বলেন, ‘বহু বছর ধরে কপিল নিজস্ব তেমনই একটি দল সংগঠিত করতে পেরেছেন। দেশ-বিদেশের নানা মাধ্যম মিলিয়ে খুব কম তারকাই আছেন, যারা এখনো ওর অনুষ্ঠানে যাননি। এই অনুষ্ঠানকে সফল করে তোলায় সেসব আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের অবদান যেমন আছে, তেমনই আছে কপিল শর্মার সহশিল্পীদের অবদানও, প্রতিটি পর্বে যাদের কৌতুক এই অনুষ্ঠানকে আরো রংদার ও জমজমাট করে তোলে।’

কপিল শর্মা সম্প্রতি একটি অন্যায় করেছেন, তা দাবি করে শ্রীজাত বলেন, ‘এইবার রংটা একটু বেশি চড়ে গেছে, তাই লিখছি। বহুবার টেলিভিশনের জন্য নানা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছি, তাই জানি, পর্দায় একজন শিল্পী বা সঞ্চালক যা যা বলেন, তার সবটাই যে তার নিজের মস্তিষ্কপ্রসূত কথা, এমনটা নয়। একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠানেও স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দেবার জন্য একাধিক লেখকের দল থাকে, সেই চিত্রনাট্য অনুযায়ী অনুষ্ঠানের চলন সাজানো হয়, সঞ্চালক বা শিল্পীদের কথার বেশ কিছু অংশও সেই সাজানো স্ক্রিপ্টের আওতায় পড়ে। টেলিভিশনের পর্দা থেকে কিছুদিন আগে কপিল শর্মা তার শোটি নেটফ্লিক্সে নিয়ে গেছেন, আপাতত শতাধিক দেশে যার সম্প্রচার হয় এবং ট্রেন্ডিং অনুযায়ী ভারতে প্রযোজিত ১ নম্বর শো এই মুহূর্তে এটিই। এই যখন তার বহর, আমি নিশ্চিত এই শোয়ের চিত্রনাট্য লেখার জন্য নির্দিষ্ট লেখকরা আছেন এবং নিঃসন্দেহে কপিল শর্মারও সে বিষয়ে বক্তব্য, সংযোজন ও সম্মতি আছে। তাই যদি ধরে নিই, তাহলে বলতে হয়, সম্প্রতি এরা জেনে বা না জেনে একটি অন্যায় করেছেন। ভুল নয়, অন্যায়। আমি স্পষ্ট ভাষায় তার বিরোধিতা করার জন্য প্রাথমিকভাবে এই লেখাটি লিখছি।’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গান নিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগ তুলে শ্রীজাত বলেন, “দিনপাঁচেক আগে নেটফ্লিক্সে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-এর একটি নতুন পর্ব সংযোজিত হয়, যেখানে অতিথিদের মধ্যে অভিনেত্রী কাজল ও কৃতি স্যানন উপস্থিত ছিলেন। সেই পর্বের মাঝামাঝি সময়ে কপিলের এক সহকারী শিল্পী বা কৌতুকাভিনেতা কৃষ্ণ অভিষেক উপস্থিত হন (যিনি নিজের নাম ক্রুষ্ণা অভিষেক লেখেন) এবং সম্ভবত কাজলকে বাঙালি বংশোদ্ভুত হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মশকরার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেন। হঠাৎ তো বেছে নেননি, সেভাবেই চিত্রনাট্য সাজানো ছিল। ঠিক কী হয়েছে, কেমনভাবে হয়েছে, এখানে বিস্তারিত বলছি না। কিন্তু ‘একলা চলো রে’ গানটি নিয়ে কৃষ্ণ অভিষেক যে ব্যাঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার উদ্রেক করেছেন, তা সম্মান ও শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে বহুদূর চলে গেছে, অন্তত আমার চোখে। পর্বটি যথাস্থানে আছে, কেউ চাইলে দেখে নিতে পারেন আর যারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, তারা ভালোই জানেন। এই কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে আমি আমার লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালাম। যে বা যারা ওই কৌতুকদৃশ্য রচনায়, উপস্থাপনায়, অনুমোদনে ও সম্প্রচারে জড়িত, তাদের সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালাম। স্পষ্ট ভাষায়, দ্ব্যর্থ উচ্চারণে।”

শ্রীজাত মনে করেন, কৌতুক আর তামাশার মাঝে সূক্ষ্ম একটা রেখা আছে। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৌতুক আর তামাশার মধ্যে একটা সূক্ষ্ম রেখা আছে, সেটা ঝাপসা হয়ে এলেই বিপদ। কী বলছি, কাকে নিয়ে বলছি, কতটুকু বলছি, এসব না ভেবে কেবল লোক-হাসানো টিআরপির জন্য নিবেদিতপ্রাণ হতে হতে মানুষ এক সময় নিজের সীমা বিস্মৃত হয়। তখন তাকে মনে করিয়ে দিতে হয়, এই চৌকাঠ পেরুনো তোমার উচিত হয়নি। আমি সেটুকুই করছি। বাঙালি মনীষীদের নাম বা কাজ নিয়ে ইচ্ছেমতো হাসিঠাট্টা করাই যায়, ভারতের অন্যান্য অংশের কিছু বাসিন্দাদের এমনটাই ধারণা। বাংলা ভাষা থেকে সংস্কৃতি, সবটাই তাদের কাছে খোরাক। ঠিক যে-কারণে অমোঘ লীলা দাস বিবেকানন্দকে নিয়ে মশকরা করার স্পর্ধা পান। পরে বিরোধের স্বর চড়লে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। কিন্তু ভারতের নানা অংশে ঘুরে দেখেছি, বাঙালিদের সবকিছু নিয়ে একটু ঠাট্টা-ইয়ার্কি অনেকেরই মজ্জাগত।’

বাঙালি অভিনেত্রী কাজলের দিকে অভিযোগের তির ছুড়ে শ্রীজাত বলেন, ‘কেউ বলতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত ভুল করে ফেললে সে একরকম। কিন্তু দেড়েকষে পিছনে লাগব বলে বাঙালি আইকনকেই বেছে নেওয়া, এ জিনিস তো নতুন দেখছি না। আমি নিশ্চিত, গালিব, কবীর বা প্রেমচন্দের লাইন নিয়ে এমন কুৎসিত মশকরা করার সাহস হতো না এদের। পরের দিন শো বন্ধ হয়ে যেত। বাঙালি এসব ঠাট্টায় অভ্যস্ত, অতএব বাঙালিকে নিয়ে মশকরা করাই যায়, তাও আবার একজন বাঙালি অভিনেত্রীর সামনে, যিনি এই মশকরায় হেসে গড়িয়ে পড়ছেন।’

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর কারণ ব্যাখ্যা করে শ্রীজাত বলেন, “আমার এহেন লেখায় যদি কারো মনে হয় আমি প্রাদেশিক, তাহলে কিছু করার নেই। আমি তবে গর্বিত প্রাদেশিক। সেইসঙ্গে এটাও বলি, যিনি আমার দেশের জন্য জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন (বাকি অন্যান্য অনেক কিছু যা যা করেছেন সেসব আর বললাম না), তার প্রতি পরিকল্পিত অসম্মানে ক্ষুব্ধ হতে গেলে প্রাদেশিকতা লাগে না। ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তার গানের অবমাননা করার পরিপ্রেক্ষিতে একজন ভারতীয় নাগরিক এবং একজন সামান্য অক্ষরকর্মী হিসেবে আমি অসম্মানিত ও আহত বোধ করছি। আমি মনে করছি, এ অসম্মান রবীন্দ্রনাথের একার প্রতি নয় বরং সমস্ত ভারতীয় ভাষাভাষী শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতি অসম্মান, বাংলা যার মধ্যে অন্যতম ভাষা।”

ক্ষমা চাওয়ার সময়সীমা উল্লেখ করে শ্রীজাত বলেন, ‘আমি জানি না কীসে এর প্রতিকার হবে। যে বাঙালির কর্ম ও কীর্তি দিয়ে গোটা পৃথিবী এক সময়ে ভারতকে চিনেছে, সুযোগ পেলেই নানা উছিলায় তাকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশার এই অলিখিত অধিকার কেড়ে নেওয়া দরকার। আমি জানি না কজন আমার সঙ্গে থাকবেন, না-থাকলেও আমি আমার প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-এর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিও জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে উল্লিখিত পর্বের ওই অংশটি পুনরায় সম্পাদনা করার দাবিও থাকল। ছেড়ে দিলে দেওয়াই যায়। কিন্তু কতদিন এবং কতদূর ছাড়ব, সেটা ভাবা দরকার। আমি সামান্য লোক, আমার চাওয়ায় কারো কিছু যায় আসে না হয়তো। কিন্তু তবু চাইছি। আজকের দিনে খবর পৌঁছাতে সাত সেকেন্ডের বেশি লাগে না। আমি সাতদিন সময়সীমা ধার্য করলাম, বিনীতভাবেই।’

ক্ষমা না চাইলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শ্রীজাত বলেন, “আর হ্যাঁ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেই এই পোস্ট লিখছি, এটাও জানিয়ে গেলাম। আজ থেকে এক সপ্তাহ, অর্থাৎ ৭ নভেম্বর, ২০২৪-এর মধ্যে আমার দাবিগুলো গৃহীত, বিবেচিত এবং পূর্ণ না হলে, আমি আইনের পথে হাঁটব। বাংলা ভাষার একজন শব্দশ্রমিক হিসেবেই হাঁটব। আর কেউ আমার সঙ্গে না থাকলেও হাঁটব। কেননা রবীন্দ্রনাথ তো বলেইছেন, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’!”

তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি কপিল শর্মা কিংবা শো কর্তৃপক্ষ।

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2023.
Site Customized By NewsTech.Com
x