চলতি বছরে জাতীয় দল, বয়সভিত্তিক দল, নারী দলের মোট ১৪টি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে চার কোটি টাকা চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিন্তু বাফুফের এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি খুব একটা ভালোভাবে নেয়নি মন্ত্রণালয়। আর সে কারণে বাফুফের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব জানতে চেয়েছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিতে সম্প্রতি সাত কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করেছে বাফুফে।
বাফুফের পক্ষ থেকে জানানো হয় মোট অর্থের ভেতর তিন কোটি টাকার জোগান আসবে ফিফা আর এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (এএফসি) থেকে। বাকি ঘাটতি চার কোটি টাকার জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাফুফের সভা থেকে।
ইতোমধ্যেই আর্থিক দুর্নীতির কালিমা লেগে গেছে বাফুফের কপালে। আর সে কারণেই বাফুফের বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিমন্ত্রী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা শুধু আমাদের কাছে চান। ফিফা-এএফসি থেকে কত পান, সেই টাকা কী করেন, তা কিন্তু আমাদের জানান না। আমাদেরও একটু জানানো উচিত।’
বাফুফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল মন্ত্রণালয় যদি সাহায্য না করে তবে স্পনসরের মাধ্যমে ঘাটতি চার কোটি টাকা উঠিয়ে নেবে তারা। এ প্রসঙ্গ টেনে রাসেল বলেন, ‘তাদের আরও একটু আন্তরিকতা দরকার ছিল। স্পনসর খুঁজে এরপর আমাদের কাছে চাইতে পারতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এর আগে তারা আমাদের কাছে এভাবে কখনও চায়নি। বাফুফের চিঠি পেলে আমরা গুরুত্বসহকারে দেখব। আমাদের খাতভিত্তিক বরাদ্দ হয়, এরপরও চেষ্টা করব যেটা খুব জরুরি, সেখানে কিছু দেওয়ার।’
চলতি বছরের ১৪টি ইভেন্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯, এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩, ছেলে ও মেয়েদের একাধিক ফিফা উইন্ডোর ম্যাচ এবং এশিয়ান গেমস।
ফুটবলের উন্নয়নে ৫৮৭ কোটি টাকার প্রকল্প বানিয়ে সেটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল বাফুফে। তাদের সেই প্রকল্প পাস হয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তারপর একের পর নাটক সাজানো শুরু করে বাফুফে।
গত মার্চে অর্থ সংকট দেখিয়ে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইপর্বে বাংলাদেশ নারী দলকে পাঠায়নি দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সেখান থেকেই শুরু। এরপর দরপত্রে অনিয়ম ও জালিয়াতির কারণে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ফিফা। সবশেষ গতকাল হুট করেই পদত্যাগ করেন ফেডারেশনের প্রধান হিসাবরক্ষক।
এসব বিষয় বিবেচনা করেই বাফুফের আয়-ব্যয়ের হিসাব জানতে চেয়েছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।