ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদানের অভিযোগকে ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। দাবি করলেন, ঘুষ খেয়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেছেন।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দাবি করেন, নুরুল হক নুর তিন দেশে গিয়ে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে বৈঠক করেছেন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানান তিনি।
এই অভিযোগের পরই সন্ধ্যায় গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নুর। বললেন, সরকারের এজেন্সির ডলার খেয়ে তিনি এমন কথা বলছেন। ভারতের ভিসা-ই নাই।
ইউসুফ রামাদান অসত্য কথা বলেছেন উল্লেখ করে তার অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজিরের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন নুর। বললেন, নিজে সুবিধা নেয়ার জন্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কালো আইন বলছি, তাই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে মামলা করবো। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছি। যা সরকারের এজেন্টরা করছে।
এছাড়া, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ভিপি নুরের পকেটে মোসাদের টাকা!’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে নুর বলেন, বিভ্রান্তিপূর্ণ সংবাদ প্রকাশের জন্য কীভাবে প্রতিকার পাবো সেটা সিদ্ধান্ত নেবো। আর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের অভিযোগের বিরুদ্ধে কি করা যায় এ নিয়ে দলের নেতাদের সাথে পরামর্শ করবো। অডিও, ভিডিও স্টিল ছবি থাকলে তা দেখাক। ওই রাষ্ট্রদূত ঘুষ খেয়ে এসব বলছেন। সামনের দিনে আরও মানুষের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবে সরকার। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, এই বছরের শুরুতে খবর বের হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট ও লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এম সাফাদির সাথে বৈঠক করেছেন নুর। সম্প্রতি দলের অপর শীর্ষ নেতা রেজা কিবরিয়াও বলেন, নুর মোসাদের সাথে বৈঠক করছেন। এমনিক অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগও তোলেন।
সম্প্রতি গণঅধিকারের বৈঠকেও এ বিষয় উঠে আসে। দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াই এ প্রসঙ্গ তুলেন। এছাড়া দলের পদ থেকে নুরকে সরিয়ে দেয়ার বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়, গণঅধিকার পরিষদের গঠনতন্ত্র, ২১ দফা কর্মসূচি, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং মূলনীতি বিরোধী কাজ করা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান, মানিলন্ডারিং আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠা, ইসরায়েলসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সভা আয়োজন ও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনোনয়ন করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. নুরুল হককে (ভিপি নুর) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নুর-মোসাদের তিন দফা বৈঠকের কথা জানান ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত।