ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।
আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেয়া হয়। এতে একদিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে ঢুকবে।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যে বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে আগে থেকে বাংলাদেশকে তথ্য দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফারাক্কার এই বাঁধ পানি আটকে রাখে, পানি ডাইভার্ট করে। শুষ্ক মৌসুমে গেট আটকিয়ে পানি ডাইভার্ট করে নিয়ে যায়। কিন্তু বর্ষাকালে ফারাক্কা সাধারণত খোলাই থাকে।
যদিও আমাদের কাছে শতভাগ তথ্য নেই, তবে এই মুহূর্তে ফারাক্কার উজানের যে অবস্থা, হাইড্রোলজি বা বিজ্ঞান মতে যেটা বোঝা যায়, ফারাক্কার গেট এই মুহূর্তে সবগুলো খোলাই রয়েছে। অর্থাৎ গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশে বন্যা হয়ে যাওয়ার মতো এমন কোনো সিচুয়েশন ফারাক্কাতে নেই। ফারাক্কার গেট রয়েছে ১০৯টি। বর্ষাকালে এগুলো খোলাই থাকে।
সোমবার বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনও নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার কবলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। বন্যায় বাস্তচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ। প্লাবনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৩ জন।
অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ায় এই আকস্মিক বন্যা। কিন্তু দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ভিন্ন কথা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।