1. imran.vusc@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক : প্রিয়আলো ডেস্ক
  2. m.editor.priyoalo@gmail.com : Farhadul Islam : Farhadul Islam
  3. priyoalo@gmail.com : প্রিয়আলো ডেস্ক :
  4. imran.vus@gmail.com : Sabana Akter : Sabana Akter
শিরোনাম
রাত ১১টা পর্যন্ত হাতিরঝিলে যান চলাচল বন্ধ গাজীপুরে অটোরিকশায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৪ হলফনামায় শেখ হাসিনার তথ্য গোপন, ব্যবস্থা নিতে দুদককে চিঠি ইমামদের নিয়োগ ও বরখাস্ত সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী হতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশে স্টারলিংক কার্যক্রমের প্রশংসা স্পেসএক্স’র ভাইস প্রেসিডেন্টের গোপালগঞ্জে কারফিউর সময় ফের বাড়লো বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন মিথ্যা মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান বিএনপির জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে: আসিফ মাহমুদ পদদলিত হয়ে সমর্থকদের মৃত্যুর জন্য কোহলিকে দুষছেন কর্নাটক সরকার

ইসরায়েল-ইরান নয়, এ যুদ্ধ ক্ষমতার বেহায়া প্রদর্শনী

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ১৪৮
Israyel.jpg 2 1 768x432

বিশেষ প্রতিবেদন, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ এখন আর শুধু রোদ-তপ্ত বালুকায় ঢাকা নয়। সেখানে প্রতিদিন ঝরে পড়ছে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র আর আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষ। একসময় যা ছিল ছায়াযুদ্ধ, আজ তা রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য সংঘাতে। ইসরায়েল ও ইরান এই দুই প্রতিপক্ষ যেন আজ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি বিস্তৃত ভূ-রাজনৈতিক নাটকের মূল চরিত্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই গল্পে শুধু তারা দুইজনই নেই; পর্দার পেছনে রয়েছে আরও বড় কিছু। এই যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সেই পুরনো বিশ্বশক্তির মোড়লির ইঙ্গিত।

ইসরায়েলের সামরিক নেতৃত্ব দাবি করছে, তারা কেবল আত্মরক্ষার জন্যই আঘাত হানছে। কিন্তু বিভিন্ন স্যাটেলাইট চিত্র, সামরিক গোয়েন্দা তথ্য এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অনুসন্ধান বলছে; এই সব কিছু বহু আগেই পরিকল্পিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের গোপন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়মিত তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে। ২০২৪ সালের শেষদিকে সিরিয়ার বিভিন্ন ইরানপন্থী ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালানো হয়, যেগুলোর পেছনে ছিল মার্কিন ড্রোন এবং ব্রিটিশ সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স।

কিন্তু ইসরায়েল আসলেই কি নিজের সিদ্ধান্তে চলছে? আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা বলেন, “ইসরায়েল হলো গাড়ির চালকের আসনে থাকা সেই যাত্রী, যে আসলে স্টিয়ারিং ঘোরালেও কোথায় যাবে, সেটা ঠিক করে অন্য কেউ।” যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের মিত্রতা, সমরাস্ত্র নির্ভরতা এবং ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে ইসরায়েলকে সামনে রেখেই এই অঞ্চল জুড়ে বড় খেলাটি চালানো হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে তেল নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রবাণিজ্য টিকিয়ে রাখা এবং চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে আটকানোর মতো গভীর স্বার্থ।

এই সংঘাত কেবল রাজনীতি নয়, এটি একটি লাভজনক ব্যবসা এখন। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি-ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র রপ্তানি করে মধ্যপ্রাচ্যে। যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে, তত বেশি অস্ত্র বিক্রি হবে। এই কারণেই অনেক সময় শান্তি নয় বরং ‘স্থায়ী উত্তেজনা’ই হয়ে ওঠে আসল লক্ষ্য।

সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, এই সংঘাত সীমিত নেই কেবল ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে। এর আঁচ লেগেছে লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, এমনকি ইরাক পর্যন্ত। বিভিন্ন গোষ্ঠী ও মিলিশিয়া বাহিনী আজ যুক্ত হয়ে পড়েছে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে। হুথি বিদ্রোহীরা প্রতিনিয়ত হামলা চালাচ্ছে রেড সি অঞ্চলে, আর হেজবুল্লাহর রকেট পড়ছে ইসরায়েলের উত্তরে।

আরেকটি বিষয়ের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে, তা হলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ভূমিকা। অধিকাংশ পশ্চিমা গণমাধ্যম এমনভাবে ইসরায়েলকে উপস্থাপন করে, যেন সে কেবল আত্মরক্ষাকারী; আর ইরান যেন কেবল ‘সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক’। এই পক্ষপাতদুষ্ট কাভারেজ সাধারণ জনগণের চোখে সত্যকে আড়াল করে দেয়। একজন সাধারণ পাঠক অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে কারা আসলে আগুন দিচ্ছে, আর কারা আগুনে পোড়াচ্ছে।

এবার ফিরে দেখা যাক ইতিহাসে। ১৯৮০ সালের ইরাক-ইরান যুদ্ধ প্রায় আট বছর চলেছিল। এতে দুই দেশই প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। অথচ লাভবান হয়েছিল সেইসব রাষ্ট্র যারা যুদ্ধের পেছনে রয়ে গিয়েছিল অস্ত্র বিক্রির জন্য। লেবানন যুদ্ধেও দেখা গেছে একই কৌশল, স্থায়ী সংঘাত মানেই ব্যবসা।

আজকের এই সংঘাতও যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে একটি জ্বলন্ত রণাঙ্গনে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না। আর এই আগুন শুধু এ অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি টেনে নিয়ে আসবে বিশ্ব অর্থনীতি, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং পরাশক্তির কৌশলগত ভারসাম্যকে।

সব শেষে এই গল্পের সবচেয়ে করুণ সত্যটি হলো, ইসরায়েল নিজেই যেন আজ এক ‘অস্ত্র’, যার মাধ্যমে আরও বড় কিছু বাস্তবায়ন করছে পশ্চিমা শক্তিরা। যুদ্ধের মঞ্চে সামনে ইসরায়েল দাঁড়িয়ে থাকলেও, তার পেছনে বসে আছে যারা স্ক্রিপ্ট লিখছে, তারা বিশ্ব পরাশক্তি।

এই যুদ্ধ তাই শুধু গাজা, তেহরান বা হাইফার নয়। এটি এক বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার খেলা, যেখানে প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের পেছনে আছে অদৃশ্য একটি কলমের আঁচড়।

 

লেখক-

মোস্তফা কামাল তোহা 

তরুণ  লেখক ও সাংবাদিক, ডিবিসি নিউজ

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved priyoalo.com © 2025.
Site Customized By NewsTech.Com