আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন। আমেরিকার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা উপদেশ নেব না, বরং উপদেশ দেব। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘আওয়ামী লীগের সফল এবং গৌরবময় পথ চলার ৭৫ বছর’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব না থাকায় অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। এতে বিশ্বব্যাপী অস্থিরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর প্রতি আমার আহ্বান, তারা যেন অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করে-এই অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে।
আমেরিকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তাদের নীতিগুলো আরো সংস্কার করা প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সরকারের নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। ‘ আর এই দলের নীতি হলো কোনো দেশের লেজুড়বৃত্তি নয়। এসব নীতির মাধ্যমে আমরা ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তি করেছি। একটা বুলেট খরচ না করেও সীমান্তে সম্প্রীতি বজায় রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, কভিডের সময় যখন কোথাও অক্সিজেন পাইনি, তখন ভারত থেকে আমরা অক্সিজেন পেয়েছি। এ ছাড়া ভারত থেকে আমরা বাজার করছি। এগুলো সম্ভব হয়েছে ভালো সম্পর্কের কারণে। অন্যদিকে এই সম্পর্ক নীতি না থাকায় পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ অন্য মুসলিম দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, অধিকাংশ দেশ নানাভাবে ভুগছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক থাকায় আমাদের কী কী উপকার হয়েছে তা নিয়ে ইআরডিএফবিকে গবেষণার আহ্বান জানান।
সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন দেশকে স্বাধীন করা। বাঙালিদের সেই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর আগে অনেক নেতা এসেছেন, তবে বাঙালিকে স্বাধীন রাষ্ট্র কেউ দিতে পারেনি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দিকে তাকালেও এমন নেতা পাওয়া যাবে না। তিনি বিশ্বের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সদস্যপদ লাভ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে এই দল আরো শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এই সরকারের আমলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, গণতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা ও দেশকে স্বল্প আয় থেকে উন্নত দেশে পরিণত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল না, তখন বিভিন্ন শাসন আমলে জনগণের অভিমতের প্রতিফলন দেখা যায়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরডিএফবি-এর সভাপতি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার।